কক্সবাজারে ‘‘লাঙ্গল’’প্রত্যাশী ৯ জন

মাহাবুবুর রহমান,কক্সবাজার
আসন্ন জাতিয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজারের ৪ টি আসন থেকে জাতিয় পার্টির মনোনয়ন চাইছে ১১ জন প্রার্থী। ইতি মধ্যে বেশির ভাগ মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় হাই কমান্ডের সাথে গভীর যোগাযোগ রেখে চলেছে। তবে আবার কিছু প্রার্থী আছে মাঠ পর্যায়ে জাতিয় পার্টির প্রচার প্রচারনার পাশাপাশি স্থানীয় নেতাকর্মীদেরর সাথে সময় দিচ্ছে। এদিকে তৃণমুলের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে সবাই জোটগত আসন ভাগাভাগি হয়ে এবং আওয়ামীলীগের সাথে থেকে নির্বাচন করতেই সচেস্ট। তবে জেলা জাতিয় পার্টির নেতৃবৃন্ধরা বলছেন ইতি মধ্যে দলীয় নীতি নির্ধারনি নেতাদের পরামর্শে জোট গত বা দল গত যে কোন ভাবেই হওক নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বর্তমান বিরোধী দলের আসনে থাকা দলটি।
১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের বিদায়ের পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী সর্ব প্রথম কক্সবাজারের চকরিয়া পেকুয়া আসনে এমপি নির্বাচিত হন বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী মোঃ ইলিয়াছ। একই সাথে সংরক্ষিত আসনে এমপি মনোয়ন পান বর্ষিয়ান নারী নেত্রী খোরশেদ আরা হক। এর পর থেকে পর্যটন শহর কক্সবাজারে জাতিয় পার্টির রমরমা অবস্থা। তবে ক্ষমতার দন্দে বেশির ভাগ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে কাদাছুড়াছুড়ি ছিল বেশ আলোচ্য বিষয়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে এখন আলোচ্য বিষয়ে হিসাবে উঠে আসছে কারা হচ্ছে কক্সবাজার থেকে জাতিয় পার্টির প্রার্থী। সে জন্য মাঠ পর্যায়ে কথা বলে ১১ জন প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে। এর মধ্যে কক্সবাজার সদর রামু আসনে জাতিয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনিবার্হী কমিটির সদস্য সাবেক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এড,মোহাম্মদ তারেক,বর্তমান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুফিজুর রহমান,জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমীন সিকদার। মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনে জাতিয়পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ মুহিবুল্লাহ,জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ্ব কবির আহাম্মদ সওদাগর,উখিয়া টেকনাফ আসনে ২০১৪ সালে বর্তমান আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির সাথে জাতিয় পার্টি থেকে যিনি নির্বাচন করেছিলেন তাহা ইয়াহিয়া,উখিয়া উপজেলা জাতিয় পার্টির সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার,টেকনাফ উপজেলা কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি মাস্টার আবুল মনজুর,চকরিয়া পেকুয়া আসনে বতর্মান সংসদ ও জেলা জাতিয় পার্টির সভাপতি হাজী মোহামদ ইলিয়াছ।
এদিকে দল মনোনয়ন দিলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি সব প্রার্থী। আলাপ কালে বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী মোঃ ইলিয়াছ বলেন,আমি সংসদ থাকা কালিন এলাকাতে প্রচুর উন্নয়ন করেছি এবং উন্নয়নে কোন ভেদাবেদ করিনি। দীর্ঘ সময় সংসদ থাকা কালে কাওকে বিন্দু মাত্র ক্ষতি করিনি যত টুকু সম্ভব দলীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সেবা করেছি। তিনি জানান দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে ইতি মধ্যে আমরা দলীয় মনোনয়ন প্রতাাশীদের তালিকা পাঠিয়েছি। সেখান থেকে দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা তাকে নিয়েই নির্বাচন করবো। দলগত হওক বা জোট গত হওক যে কোন পরিস্থিতিতে আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। গুরুত্বপূর্ন আসন হিসাবে সদর আসনে জাতিয়পার্টির মনোনয়ন দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে আছেন বলে জানান কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এড,মোহামদ তারেক। তিনি বলেণ, দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম আমাকে দিক নির্দেশনা দিয়েছে সে অনুযায়ী আমি মাঠে আছি দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী সহ সব মানুষ আমার প্রতি আস্থা রাখছে। এদিকে জেলা জাতিয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুফিজুর রহমান বলেন,আমি গত নির্বাচনে ও দলের মনোনয়ন পেয়েছিলাম পরে জোটের কারনে সিন্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে সে খেত্রে আমি মনোনয়ন পাব সেটা আশা করা যায়। আর দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বলতে পারি জেলার ৪ টি আসনে আমাদের প্রার্থী তালিকা চেয়ারম্যানের হাতে দেওয়া আছে,উনি যেভাবে সিন্ধান্ত দেবে আমরা সেভাবেই নির্বাচন করবো। একই ভাবে জেলা জাতিয়পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার বলেন,দলের সু সময় দুঃসময় যে কোন পরিস্থিতিতে আমি সব সময় মাঠে আছি এবং থাকবো। আমি মনোনয়ন চাইছি এবং সে অনুযায়ী কাজ করছি। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে নিয়ে কাজ করবো।
এদিকে মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনে গত কয়েক বছর থেকে জাতিয়পার্টির ব্যানারে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছেন অন্যতম প্রার্থী মোঃ মুহিবুল্লাহ,তিনি বলেন, ইতি মধ্যে জাতিয় পার্টি থেকে কক্সবাজার ২(মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে মনোনয়ন দিয়েছে,সেটা আমি দাবী করে বলতে পারি কারন দল ইতি মধ্যে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে বলেই সে অনুযায়ী আমি মহেশখালীর প্রতিটি ইউনিয়নে এবং ওয়ার্ডে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে দলীয় নেতাকর্মী সহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে উজ্জিবিত করেছি। এবং মানুষ আমার প্রতি আস্থাশীয় এটা আমি দাবী করে বলতে পারি। এবং পুরু জেলায় জাতিয় পার্টি লাঙ্গল মার্কা নিয়ে আমি একমাত্র মাঠে কাজ করছি। অন্যদিকে ৪ নভেম্বর পার্টির চেয়ারম্যান হুসেন মোহাম্মদ এরশাদের সাথে ঢাকা গিয়ে সাক্ষাত সহ মনোনয়নের ব্যাপারে কথা বলে এসেছেন বলে জানান সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব কবির আহামদ সওদাগর,তিনি বলেণ,পার্টি চেয়ারম্যান আমাকে বলেছে পরিস্থিতি বুঝে সব কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে উখিয়া টেকনাফ আসনের প্রার্থী তাহা ইয়াহিয়া বলেন,শত প্রতিকূলতার মাঝেও গতবার আমি একমাত্র ব্যাক্তি যে নির্বাচনী মাঠে শেষ পর্যন্ত ছিলাম। তাই আমি আসা করছি আমি আবারো জাতিয় পার্টি থেকে নির্বাচন করবো এবং দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। অন্যদিকে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সার্বক্ষনিক অবদান রাখছেন এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী জানিয়ে উখিয়া উপজেলা জাতিয় পার্টির সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার বলেন, তৃণমুলের সমস্ত নেতাকর্মী আমার সাথে আছে আমি ইতি মধ্যে মনোনয়নের জন্য দলের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছি সে অনুযায়ী আমি মাঠে কাজ করছি।আরেক প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা জাতিয় পার্টির সিনিয়র সভাপতি মাস্টার আবুল মনজুর বলেন,আমি ছাত্র জীবন থেকে জাতিয় পার্টির সাথে আছি এবার পার্টির লোকজন আমাকে বলেছে নির্বাচনের জন্য তৈরি হতে সে জন্য আমি মাঠ পর্যায়ে কাজ করে চলেছি। এদিকে জাতিয় পার্টির কেন্দ্রী কমিটির যুগ্ন দপ্তর সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক খান জানান,কক্সবাজার ২ আসনে ইতি মধ্যে সম্মিলিত জাতিয় জোটের পক্ষ থেকে মোঃ মুহিবুল্লাহে প্রার্থী মনোনয়ন করা হয়েছে।
তবে বেশ কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে সবাই এখন কেন্দ্রের দিকে চেয়ে আছে,যদি সেখানে জোটগত ভাবে সিদ্ধান্ত হয় আর আওয়ামীলীগকে যদি সাথে পায় তাহলে আমাদের প্রার্থীরা ভাল করতে পারবে। আর যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে তখন সব হিসাব নিকাশ অন্যরকম ভাবে করতে হবে বলে জানান তারা।