একাত্তরলাইভডেস্ক: মানহানি মামলায় আটকের পর ডিবি হেফাজতে সকালের নাস্তায় সোনারগাঁও হোটেলের খাবার খেতে চেয়েছেন ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন।
মঙ্গলবার গ্রেফতার অভিযান পরিচালনাকারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ডিবি হাজতে তিনিসহ ১৮ জন আসামি ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী সকলের জন্য ডিবি ক্যান্টিনের ১৩ টাকার খাবার সরবরাহ করা হয়। খাবারের মেন্যুতে ছিল পাঙ্গাস মাছের ঝোল, ভাত আর সবজি। ব্যারিস্টার মইনুল এসব খাবার দেখে ডিবি কর্মকর্তাকে ডেকে বলেন, ‘আমার জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেন। আমি টাকা দেব। এসব খাবার আমি খেতে পারব না। প্রয়োজনে সোনারগাঁও হোটেল থেকে খাবার নিয়ে আসেন।’
জবাবে ওই ডিবি কর্মকর্তা বলেছেন, না স্যার, আইন অনুযায়ী সকল আসামি যে খাবার খাবেন আপনাকেও তাই দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি সকলের সঙ্গে ওই খাবার খান।
এর আগে, সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে কটূক্তির জেরে রংপুরে দায়ের একটি মানহানির মামলায় সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে ব্যারিস্টার মইনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান, ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম রংপুরের একটি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাকে সেই পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ডিবি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
জেএসডির সহসভাপতি ও আ স ম আবদুর রবের স্ত্রী তানিয়া রব জানান, সোমবার রাত ৯টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল তাদের উত্তরার বাসায় আসে। এ সময় তিনি জেএসডির পার্টি অফিসে ছিলেন। পুলিশ তাদের বাসা ঘিরে রেখেছে শুনে বাসায় ফেরেন তানিয়া।
বাসায় একসঙ্গে এত পুলিশ সদস্যের আগমনের বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা বলেন, তারা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে নিয়ে যেতে এসেছেন। তানিয়া রব ও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের যথাযথ নথিপত্র দেখানোর পর রাত ১০টার দিকে ওই বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
উল্রেখ্য, মইনুল হোসেন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এক পর্যায়ে বলেন, ‘উনি গিয়েছিলেন ব্যারিস্টারি পড়তে। সেই যুগে ব্যারিস্টারি পড়তে যাওয়া তো কম কথা না। আমাদের তোফাজ্জল হোসেন মানিক কাকা তাকে ব্যারিস্টারি পড়তে পাঠালেন। আমাদের দুই পরিবারের মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। যখন যা লাগতো একটা কিন্তু সহযোগিতা হতো, সব হতো। ব্যারিস্টারি পাস করে আসার পর উনি সাহেব হয়ে গেলেন। মানিক কাকা কিন্তু সব সময় পান্তা ভাত খেতেন। পান্তা ভাত খেতে উনি খুব পছন্দ করতেন। আর উনার ছেলে আসলেন সাহেব হয়ে। উনি বাংলাদেশি খাবার খেতে পারেন না, সাহেবি খাবার খেতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই চাচি এসে মায়ের কাছে (বেগম ফজিলাতুন্নেসা) খুব আপসেট হয়ে বলতেন, আমি কী করি? আমার ছেলে এখন ইংরেজি খাবার খাবে। সেই যুগে একশ’ টাকা দিয়ে উনার ইংরেজি খাবার রান্নার জন্য বাবুর্চি রাখা হলো। উনি হলেন সেই কাক যে ময়ূরপুচ্ছ লাগিয়ে যে চলে। উনি বিদেশে ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে উনি ইংরেজ হয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই হলো সেই লোক। যিনি খাওয়াটা শিখেছিলেন ঠিকই কিন্তু, ইংরেজদের ভদ্রতাটা শিখে আসেন নাই। কথা বলাটা শিখে আসেন নাই । আরও জানি। সব পরে বলবো।’
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের সত্যতা প্রমান করলেন মইনুল হোসেন নিজেই ।