ব্রাজিলের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর লড়াই

ক্রীড়া ডেস্ক: মিশনটা হেক্সা জয়ের। গত বিশ্বকাপের ব্যর্থতা চাপা দেওয়ারও। সেই সংকল্প ধরে রেখে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্তভাবে শুরুর আভাস দিচ্ছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের আশা জাগিয়েও সেলেকাওরা মাঠ ছাড়ে ১-১ গোলে ড্র করে। ব্রাজিলের প্রথমার্ধটা ছিল দৃষ্টিনন্দন ফুটবলের পসরা। ফিলিপ্পে কুতিনহো, নেইমার, উইলিয়ান ও গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা একের পর এক আক্রমণ করে সুইসদের রক্ষণভাগের ভিত

নাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত আবেদনটা ধরে রাখতে পারেননি জোগো বোনিতোরা। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে গোল হজম করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের।

বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল ও অন্যতম ফেভারিট হিসেবে ব্রাজিলের ওপর চাপ ছিল বেশি। অন্যদিকে টিটের শিষ্যদের বিপক্ষে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ছয় নাম্বার দল সুইজারল্যান্ড লড়াই করেছে সমানতালে। ‘ই’ গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষও তারা। যদিও এবারের বিশ্বকাপে সহজ বা কঠিন প্রতিপক্ষ বলতে কিছুই প্রতীয়মান হচ্ছে না।

আজ শিরোপা উদ্ধারের মিশন বা দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠার জন্য কোস্টারিকার বিপক্ষে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই টিটের শিষ্যদের। কারণ হোঁচট খেলেই ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকেই ঘরে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে ব্রাজিলের সামনে। শক্তির বিচারে কোস্টারিকা থেকে অনেক দূর এগিয়ে আছে ব্রাজিল। ১০ বারের দেখায় ৯ বার জয় পেয়েছে ব্রাজিলিয়ানরা। কোস্টারিকার জয় মাত্র একটিতে। তাও ১৯৬০ সালের প্রীতি ম্যাচে। এই নিয়ে বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। ১৯৯০ ও ২০০২ বিশ্বকাপেও জয় পেয়েছে সেলেকাওরা।

সুইসদের বিপক্ষে টিটে দল সাজিয়েছিলেন ৪-১-২-৩ ফর্মেশনে। তবে আজ কৌশলের পরিবর্তন আনতে পারেন এই কৌশলী কোচ। দলের প্রাণভোমরা নেইমারের ইনজুরির কারণে মূল একাদশেও পরিবর্তন হতে পারে। চোট থেকে ফিরেই প্রীতি ম্যাচে দুই গোল করেছিলেন নেইমার। তবে সুইসদের বিপক্ষে তেমন কোনো সুবিধা করতে পারেননি এই ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন। উল্টো গোড়ালিতে আঘাত পেয়েছেন। আর ফাউলের শিকার হয়েছেন ১০ বার। আরেকবার হলে ছুঁয়ে ফেলতেন ইংল্যান্ড স্ট্রাইকার অ্যালেন শিয়েরার রেকর্ড। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ১১ বার ফাউলের শিকার হয়েছিলেন এই ইংলিশ কিংবদন্তি। তবে ‘কোন কিছু চিন্তা করার দরকার নেই’ সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন নেইমার।

বিশ্বকাপের আগ থেকেই ব্র্রাজিল ভুগছে দলের নেতৃত্ব নিয়ে। প্রীতি ম্যাচে জেসুসের হাতেও আর্মব্যান্ড পরিয়ে দিয়েছিলেন টিটে। তবে সুইসদের বিপক্ষে আর্মব্যান্ড ছিল মার্সেলোর বিপক্ষে। গত বিশ্বকাপে দলের অধিনায়ক ছিলেন থিয়াগো সিলভা। দলের নেতৃত্ব ঠিক করতে না পারলেও শিরোপা পুনরুদ্ধারের জন্য টিটে প্রথম থেকেই জোর দিচ্ছেন দলের শৃঙ্খলার ওপর। সেন্ট পিটার্সবার্গে কোস্টারিকানদের বিপক্ষে জয় নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোরও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে ব্যক্ত করেছেন নেইমারের মাঠে নামার সম্ভাবনা নিয়েও। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা জিততে চাই, এটা বিশ্বকাপ। সে (নেইমার) মাঠে নামতে পারে।’

আজকের ম্যাচে পুনরায় স্পটলাইটটা কেড়ে নিতে পারেন গত ম্যাচে ২৫ গজ দূর থেকে গোল করা কুতিনহো। সুইসদের বিপক্ষে সবচেয়ে নজরকাড়া পারফর্ম্যান্সও ছিল এই বার্সেলোনা মিডফিল্ডারের। তার পাসের হার ছিল ৮৯.৬ শতাংশ। তাছাড়া চোটের কারণে একাদশে নেইমার না থাকলে আক্রমণভাগে যোগ হবেন রবার্তো ফিরমিনো। অন্যদিকে কোস্টারিকান কোচ অস্কার রামিরেজকে গোলের জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে জোহান ভেনেগাসের দিকে। ল্যাটিন আমেরিকার বাছাইপর্বে ৩ গোল করেছিলেন তিনি। কোস্টারিকা বিশ্বকাপে শেষ জয় পেয়েছিল ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে। কনমেবল অঞ্চলের দল উরুগুয়েকে হারিয়েছিল ৩-১ গোলে।

আজকের খেলা

ব্রাজিল-কোস্টারিকা (সন্ধ্যা ৬টা)

নাইজেরিয়া-আইসল্যান্ড (রাত ৯টা)

সার্বিয়া-সুইজারল্যান্ড (রাত ১২টা)

সরাসরি দেখাবে বিটিভি, মাছরাঙা, নাগরিক, সনি টেন ২ ও ৩