`১০ বছর ধরে ছিকলে বাঁধা ‘মানষিক প্রতিবন্ধী মজনুর জীবন’

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
কিছু ছবি আপনাকে আবেগের জলে ভাসিয়ে দেবে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ছিকলে বন্দী মানষিক প্রতিবন্ধী যুবক মজনুর জীবন। একটি যুবকের জীবন বাঁচানোর জন্য অসহায় মা-বাবার বেঁচে থাকার করুণ আকুতির প্রতিচ্ছবি এটি। অর্থের অভাবে তার পিতা-মাতা পারছেনা চিকিৎসা করানো। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ছেলেটা ফিরে পেতে পারে সুস্থ জীবন।

মানষিক প্রতিবন্ধী মজনুকে ঘরের খুটির সাথে ছিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাকে ছেরে দিলেই বস্ত্রহীন হয়ে রাস্তায় রাস্থায় ঘুড়ে বেড়ায়, পানিতে পড়েথাকে, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের মারধর করে এবং কুকুর সহ গরু-ছাগলের মুখে হাত দিয়ে খেলা করে।

সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানার রুকশী জালালপুর ইউনিয়নের সরাতৈল গ্রামের দিন মুজুর সুলতান শেখের বিশ বছর বয়সের ছেলে মজনু। তার জন্ম হয়েছিল স্বাভাবিক ভাবে। জন্মের এক বছর পরে মাথায় আগাত লাগার কারণে মজনুর এ অবস্থা। অভাবের সংসারে দিন মুজুর মজনুর বাবা সুলতান প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। অর্থের অভাবে আর উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। তবে উন্নত চিকিৎসা করা হলে সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে বলে জানালেন মজনুর মা মমতা খাতুন।

মানষিক প্রতিবন্ধি মজনুর মা মমতা বেগম জানায়, শশুরের কাছ থেকে তিন শতাংশ জমি পাইছি তার উপর একটা বাংলা ঘর তুলে বসবাস করছি। আমার দুই ছেলে চার মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ভাই-বোনের মধ্যে মজনু ৩য়। আমরা সারাদিন মানুষের বাড়ীতে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে একবেলা খেয়ে না খেয়ে কোনমত সংসার চলে।

অর্থনৈতিক অভাবে কারণে বড় কোনো ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারি নাই। দরিদ্র হওয়ায় পরিবারে ঠিকমত খাবারও জোটেনা।
স্থানীয় একাধিক হুজুর ও ওঁঝা দিয়ে ঝাড়ফুক দিয়েছি তাতে কোন উপকার হয়নি।

ঘরের খুটার সাথে বন্দী করে রেখেছেন কেন প্রশ্ন করতেই, মজনুর মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। হারিয়ে ও কারও ক্ষতি করার ভয়ে এবং লোকজনের মারধরের হাত থেকে রক্ষার জন্য তাকে এভাবে আটকে রাখা হয়েছে ১০ বছর ধরে। তিনি আরও জানান, আগে একটু ভালো ছিলো এখন সাথে কাপরও রাখতে চায়না। তার ছেলেকে সুস্থ করতে তিনি সবার কাছে সাহায্য আবেদন জানিয়েছেন।

প্রতিবেশী আব্দুল কুদ্দুছ সহ অনেকেই জানায়, অনেক কষ্ট করে ছেলেটা পালতেছে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেনা কেউ সাহায্য করলে ছেলেটার চিকিৎসা করালে ভালো হয়ে যাবে। প্রয়োজনে আমরা এলাকা থেকে কিছু সাহায্য করব। এছারা এলাকা বাসী উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করার অনুরোধ জানায়।