মাহাবুবুর রহমান
কক্সবাজারের বহুল প্রত্যাশিত সরকারি মেডিকেল কলেজে ক্লাস শুরুর মধ্য দিয়ে নতুন পথচলা শুরু হয়েছে। ৮ জানুয়ারী সকাল সাড়ে ৭ টায় প্রথম ক্লাস হয়েছে জানিয়েছে কলেজ অধ্যক্ষ, ইতি মধ্যে নতুন নির্মিত মূল ক্যাম্পাস ব্যাবহার করার জন্য প্রয়োজনিয় জিনিস পত্র স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ৫০ কৌটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই মূল ক্যাম্পাসে একাডেমিক ভবন ছাড়াও রয়েছে ২ টি আলাদা হোস্টেল ভবন, প্রসস্থ ক্লাস রুম, প্রশিক্ষন রুম, ল্যাবরটরী, লাইব্রেরী,মিলনায়তন, ডরমেটরী, প্রসস্থ খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, মসজিদ সহ বেশ কিছু আধুনীক সুযোগ সুবিধা। সংশ্লিষ্ট্যদের মতে এটি খুবই মানসম্মত এবং একটি আধুনীক মেডিকেল কলেজ হয়েছে যা দেশের মধ্যে অন্যমত। আপাতত মেডিকেল কলেজ কাম হাসপাতাল না হলেও খুব দ্রুত ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও এখানে গড়ে তুলার জন্য সরকারের নীতিগত সিন্ধান্ত আছে বলে জানান কর্মকর্তারা। এদিকে নতুন বছরেই নিজস্ব ক্যাম্পাসে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম করতে পারায় বেশ আনন্দিত মেডিকেল কলেজ সংশ্লিষ্ট্যরা। একই সাথে কক্সবাজারের একটি নতুন পথচলা শুরু হলো যা আগামীতে কক্সবাজারের চিকিৎসা সেবায় একটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে।
কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম বলেন আজ থেকে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের মূল ভবনে আনুস্টানিক শ্রেনী কার্যক্রম বা ক্লাস শুরু হয়েছে ইনশাআল্লাহ, সকাল সাড়ে ৭ টায় নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী ক্লাস শুরু হবে। ইতি মধ্যে কলেজের সরাঞ্জাম স্থানান্তর করা সহ নতুন আরো অনেক কিছু স্থাপন করা হয়েছে। আরো বেশ কিছু সংযোজনের অপক্ষোয় আছে। আমি বিশ্বাষ করি এটি বাংলাদেশের একটি নান্দনিক মেডিকেল কলেজ হবে। এ জন সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এটি কক্সবাজারের মানুষের সম্পদ তাই এটিকে লালন ও ধারন করতে হবে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার গতপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী পলাশ তালুকদার বলেন ২০১২ সালে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ নির্মান প্রকল্প শুরু হয় এতে ৬ তলা বিশিষ্ট্য একাডেমীক ভবনের জন্য ৪১ কৌটি ১৯ লাখ টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল সেখানে ৩৬ কৌটি ৬৭ লাখ টাকার বরাদ্ব পাওয়া গেছে সে অনুযায়ী ব্যায় করে একাডেমিক ভবন আর ১৩ কৌটি ৬০ লাখ টাকা ব্যায়ে পুরুষ আর মহিলাদের জন্য ২ টি আলাদা হোস্টেল ভবন ছাড়াও আধুনীক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন সব ধরনের স্থাপনা নির্মান কাজ আমরা নির্ধারিক সমযের মধ্যে শেষ করেছি। বর্তমানে মেডিকেল কলেজ ভবন সম্পূর্ন প্রস্তুত, কতৃপক্ষ চাইলে যে কোন মূহুর্তে কার্যক্রম শরু করতে পারে।
এদিকে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ ও নতুন নির্মিত মূল ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে পেরে খুবই আনন্দিত সবাই । এ ব্যপারে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ ফরিদুল হক বলেন আমি খুবই আনন্দিত একটি ইতিহাসের অংশ হতে পেরে আমরা হয়তো থাকবো না কিন্তু এই বৃহৎ প্রতিস্টান স্ব-গৌরবে থাকবে, আর বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ আন্তরিকতার কারনে যথা সময়ে এক বড় বাজেটের কাজ শেষ হয়েছে এ জন্য সরকারের দায়িত্বশীল সবাইকে বিশেষ ধন্যবাদ। বিশেষ করে আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয় এ বিষয়ে খুব আন্তরিক ছিল। ইতি মধ্যে বেশির ভাগ ফার্নিচার সহ প্রয়োজনীয় সরাঞ্জাম মূল ভবনের স্থাপন হয়েছে। তাছাড়া এখানে যে সব সুযোগ সুবিধা আছে সে গুলো খুবই উন্নত মানের। আমি মনে করি আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য এটা খুবই সু-ভাগ্যের বিষয় যে তারা একটি ভাল পরিবেশে এমবিবিএস পাস করার সুযোগ পাবে। তবে খুব দ্রত অন্তত ২ টি গাড়ী দেওয়া দরকার যাতে শিক্ষার্থীরা কক্সবাজার হাসপাতালে এসে তাদের ওয়ার্ড প্রশিক্ষন বা নিয়মিত ক্লাস কর্যক্রম শেষ করতে পারে।
সহযোগি অধ্যাপক ডাঃ ফরহাদ হোসেন বলেন নতুন বছরের শুরুতেই মুল ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু হবে এরকম একটি পরিকল্পনা ছিল সে অনুযায়ী কাজ হয়েছে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে খুবই আনন্দিত যে এখন থেকে মেডিকেল কলেজ তার নিজস্ব ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে। একই সাথে আগের মেডিকেল কলেজের স্থানে আরো নতুন কোন চিকিৎসা কার্যক্রম চলবে যা থেকে কক্সবাজারের মানুষ উপকার পাবে।এই বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতাকে আসলেই ধন্যবাদ জানাতে হবে। কারন বাজেট বরাদ্ব সময় মতো না হলে কোন কাজের সফলতা দেখা যায় না। সে খেত্রে কক্সবাজারবাসী ভাগ্যবান যে তারা যথা সময়ে বরাদ্ব পেয়েছে এবং কাজ ও শেষ হয়েছে।
সিনিয়র ডাঃ এমএ কামাল বলেন আমি যতটুকু জানি গত কাল মিলাদ পড়ানো হয়েছে এবং আজ থেকে ক্লাস শুরু হবে। এখন থেকে ছেলে মেয়েরা একটি উন্নত পরিবেশে তাদের শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারবে, কারন নতুন মেডিকেল কলেজ ভবনে যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা আছে সেটা দেশে কোন মেডিকেল কলেজে আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে। আমার বিশ্বাষ কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ খুব তাড়াতাড়ি সারাদেশের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রধান আগ্রহস্থান হবে। তবে এখানে কিছু কার্যক্রম এখনো সদর হাসপাতাল কেন্দ্রীক রয়ে গেছে তাদের জন্য বিশেষ গাড়ীর ব্যবস্থা করা খুব দরকার।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বিএমএ সাধারন সম্পাদক ডাঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে বিশ্বাষী উনার রাজনীতি মানুষের কল্যানের জন্য। পর্যটন নগরী কক্সবাজারে একটি বিশ্বমানের মেডিকেল কলেজ করার স্বপ্ন উনার নিজের ছিল। তাই তিনি ২০১২ সালে নিজ হাতে এই কলেজের নির্মান কাজ উদ্বোধন করেন। এবং সময়ের আগেই সেই কাজ এখন সমাপ্ত। এখানে ৬ তলা বিশিষ্ট্য আধুনীক একাডেমী ভবন, ২ টি আলাদা হোস্টেল ভবন, ল্যাবরটরী, প্রশিক্ষন সরাঞ্জাম, লাইব্রেরী, ক্লাস রুম, প্রসস্থ খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, মসজিদ সহ সব ধরনের স্থাপনা বয়েছে। এখানে রাস্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আসা কর্মকর্তারা পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেছে এটি এযাবত কালের দেশের সব ছেয়ে মনোরম এবং আধুনীক মেডিকেল কলেজ। এবং সামনে দেশের বাকি মেডিকেল কলেজ গুলোও এই আদলে করা হবে। আমি মনে করি আমরা কক্সবাজার বাসী অন্তত্য ভাগ্যবান যে আমরা একটি পরিপূর্ন মেডিকেল কলেজ পেয়েছি।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ও বিএমএ সভাপতি ডাঃ পুচনু বলেন নতুন বছরেই নতুন উপহার হবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ। এর সাথে খুব দ্রুত ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট্য হাসপাতালও করার জন্য সরকার নীতিগত সিন্ধান্ত নিয়েছে। যাতে সর্বাধুনীক চিকিৎসা সুবিধা থাকবে। আমরা যতটুকু জানি হাসপাতাল নির্মানে খুব দ্রুত বাজেট আসবে। এতে কক্সবাজারের চিকিৎসা ব্যবস্থা বহুগুনে উন্নত হবে। এবং কক্সবাজারের স্থানিয় মানুষ এর সুফল ভাল সুফল পাবে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল আমিন মিয়া বলেন আমি খুবই আনন্দিত যে একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। প্রায় ৫০ কৌটি টাকা ব্যায়ে এ কাজ শেষ করেছে গনপূর্ত অধিদপ্তর। এবং সময় মত কাজ শেষ করতে পারায় নিজের কাছেও ভাল লাগছে। এবং ক্লাস শুরু হবে শুনে খুবই ভাল লাগছে কারন আমি ও একটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকতে পারবো।