একাত্তর লাইভ ডেস্ক:
কোন নির্বাচনই ব্যয় সীমার মধ্যে থাকছে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে টাকার যে একটা ভূমিকা আছে এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।’
সচিবালয়ে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের এ কথা বলেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে কালো টাকার প্রসঙ্গ এসেছে-এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কালো কি সাদা টাকা আমি জানি না। আমাদের দেশে নির্বাচনে মানি ফ্যাক্টর এখনও। মানি হ্যাজ এ রোল টু প্লে। এখানে টাকার যে একটা ভূমিকা আছে এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যেখানে টাকার অঙ্ক নির্ধারণ করে দিয়েছে সে অঙ্কটা কোনো ইলেকশনেই বেঁধে দেওয়া ব্যয় থাকছে না, সীমাটা অনেক জায়গাতেই লঙ্ঘিত হচ্ছে।’
‘নারায়ণগঞ্জে যে নির্বাচন হল ওখানে কিন্তু টাকা ছড়াছড়ির বিষয়টা আসেনি। এই ইলেকশনকে মডেল ইলেকশন হিসেবে গণ্য করতে পারি। ইলেকশন হয়েছে ফ্রি (অবাধ), ফেরায় (সুষ্ঠু), ক্রেডিবল (বিশ্বাসযোগ্য), পার্টিসিপেটরি (অংশগ্রহণমূলক) একটা ইলেকশন হয়েছে, যেখানে কালো টাকার ছড়াছড়ি নিয়ে কেউ প্রশ্ন করেননি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আধুনিক গণতন্ত্রের বিভিন্ন দেশেও কালো টাকা…ভারত, যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশেও টাকার ছড়াছড়ি, অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন আছে। এই প্রশ্ন থেকে গণততান্ত্রিক দেশগুলোও মুক্ত নয়। টাকার যথেচ্ছ ব্যবহারটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুভ নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা হতে হবে সবেচেয়ে বেশি।’
প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নির্বাচন থেকে বিদ্রোহীদের সরানো হয়নি
আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা জেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাদের প্রতি কোনো বার্তা আছে কি না- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই ইলেকশনে অপজিশন অংশ নেয়নি। অপজিশন বলতে বিএনপি-জাতীয় পার্টি তাদের কোনো অংশগ্রহণ এই নির্বাচনে নেই। এখানে আমরা মনোনয়ন দেইনি কাউকে, আমরা সমর্থন করেছি। আমাদের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড থেকে ৬১ জেলায় ৬১ জনকে সমর্থন দিয়েছি।’
জেলা পরিষদে ইতোমধ্যে ২২ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি যারা আছেন, আমরা একটা পর্যায়ে বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করলাম যে, অপজিশন নেই ইলেকশনটার একেবারেই আনঅপোজ সবাই হয়ে যাবে, এটা কেমন যেন একটা রং ম্যাসেজ যায়। সেজন্য আমাদের পলিসি হচ্ছে পার্টি সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করার নির্দেশনা আছে। কিন্তু যারা প্রতিপক্ষ হিসেবে নির্বাচন করছে, দলীয় লোক হলে তাদের প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ বা কনভেন্স করা-সে বিষয়টা আছে, কিন্তু চাপাচাপিটা করা থেকে আমরা বিরত থেকেছি। এটা হচ্ছে এই ইলেকশনে আমাদের স্ট্যাটেজি।’
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনে অবস্থান অত্যন্ত কঠিন
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আচরণবিধি যাতে কোনো মন্ত্রী-এমপি লঙ্ঘন না করে সে বিষয়ে শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে নির্দেশনা আছে। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠিন। কেউ কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে। তাদের সতর্ক করেছি। আমি তাদের আবারও সতর্কবার্তা পাঠাতে চাই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তারা এলাকায় অবস্থান করতে পারবেন না, কোনো প্রকার নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে না। যারা এলাকায় আছেন স্ব স্ব এলাকা ত্যাগ করুন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার দুজনের ব্যাপারে বলেছেন। গতকাল তাদের ফোন করে এলাকার ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছি।’
নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন হওয়া দরকার
অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার কথা বলছেন। আপনারাও এটা মনে করেন কি না-একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আইন হওয়া দরকার। দেরি হয়ে গেছে, বেটার লেইট দেন নেভার। রাষ্ট্রপতি নিজেও বলেছেন বিষয়টা তিনি ভাবছেন এবং সক্রিয়ভাবে ভাবছেন। ইউ হ্যাভ টু ওয়েট সাম টাইম।’
দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে কিনা- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। ইউ ক্যান নট গো বিয়ন্ড কন্সটিটিউশন (আপনি সংবিধানের বাইরে যেতে পারেন না)’