মাহফুজ আনামকে সাংবাদিকতা ছাড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সাবেক সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মাইনাস টু ফর্মুলার মাধ্যমে তাকে ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে দুই পত্রিকার সম্পাদক জড়িত ছিলেন কি-না, প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম তাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণে বার বার মিথ্যা সংবাদ ছাপছিলেন বলেও অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এখন ভুল স্বীকার করায় তাকে সাংবাদিকতা ছেড়ে দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, দু’টি পত্রিকা ডিজিএফআইয়ের লিখে দেওয়া মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে সে সময় রাজনীতি থেকে আমাকে এবং খালেদাকে চিরদিনের জন্য সরিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়েছে। আর ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম দুর্নীতিবাজ বানানোর জন্য আমাকে বহু চেষ্টা করেছিলেন। তিনি স্বীকারও করেছেন, ডিজিএফআইয়ের চাপে তিনি সেসব নিউজ ছেপেছিলেন।

এখন ভুল স্বীকার করায় তাই তার পদত্যাগ করে সাংবাদিকতা থেকে সরে আসা উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

বিশ বছর ধরে ওই দু’টি পত্রিকা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা লিখেই চলেছে বলেও অভিযোগ তার।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর তার ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিনা ওয়ারেন্টে তাকে গ্রেফতার করে সলিটারি কনফাইনমেন্টে পাঠানো হয়। গ্রেফতারের সময় তার অসুস্থ স্বামীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। কারাগারে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসা করানো হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন সেখানে স্যাঁতসেঁতে ঘরে তাকে থাকতে দেওয়া হয়, ছেড়া কম্বলে তার গায়ে অ্যালার্জি উঠে যায়, চোখে সমস্যা দেখা দেয়। এরপর পরীক্ষা করে চিকিৎসক হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও তাকে কারাগারেই পাঠানো হয়।

সেখানে ঈদের দিনে কেবল স্বামী ও ফুফুকে দেখা করতে দিলেও তাদের বলে দেওয়া হয়েছিলো মিডিয়ার সামনে মুখ না খুলতে।

কিন্তু আমার ফুফুও বঙ্গবন্ধুর বোন, তিনি নিজের বাড়িতে সাংবাদিক ডেকে যখন কারাগারের ভেতরের পরিস্থিতি জানান, তখন আমার চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হয়, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তবে সে কারণে দেশের ক্ষতি হয়েছে, দেশবাসীকে কষ্ট করতে হয়েছে, বিপাকে পড়তে হয়েছে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের, আর তার নিজের ও পরিবারের ক্ষতিতো হয়েছেই।

শেখ হাসিনা বলেন, এদের বিচারের ভার আমি দেশবাসীর ওপর ছেড়ে দিলাম।