স্বাস্থ্য ডেস্ক:
বাচ্চাদের সাধারণত হার্টের সমস্যা হয় না; কিন্তু জন্মগত কিছু ত্রুটির কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। একটি হার্টে চারটি চেম্বার বা প্রকোষ্ঠ থাকে। রক্ত ওপর থেকে নিচে এক চেম্বার থেকে অন্য চেম্বারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধমনি এবং শিরার মধ্য দিয়ে শরীরের কোষে কোষে প্রবাহিত হয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান ছড়িয়ে দেয়; কিন্তু পাশাপাশি চেম্বারের মধ্যে কোনো সংযোগ থাকে না। গর্ভাবস্থায় পাশাপাশি চেম্বারের মধ্যে ছিদ্র থাকে যার ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয় এবং জন্মের সময় বা জন্মের পর প্রথম তিন মাসের মধ্যে এই ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে এই ছিদ্র বন্ধ হয় না বলেই হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন হার্ট বড় হয়ে যায়, ভাল্ভ নষ্ট হয়ে যায়Ñহার্ট ফেইলুর হয়, ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। বাইরে থেকে এ সমস্যা বোঝা না গেলেও কিছু লক্ষণ দেখে অনুধাবন করা যায়।
লক্ষণগুলো কী কী : হার্টের এই ছিদ্র ছোট বা বড়র ওপর নির্ভর করে লক্ষণগুলো। যদি ছোট হয় তাহলে শিশুর ঘন ঘন শ্বাসনালিতে ইনফেকশন হয়, শ্বাসকষ্ট হয়, সামান্য খেলাধুলা করলে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ঝিমিয়ে পড়ে, বুক ধকধক করতে থাকে এবং খালি চোখে বুকের মাংশপেশির লাফানো দেখা যায়। যদি ছিদ্র বড় হয় তাহলে ওপরের সমস্যার পাশাপাশি দেখা যায় শিশু উচ্চরক্তচাপে ভোগে এবং এ কারণে এক চেম্বার থেকে রক্ত অন্য চেম্বারে বেশিমাত্রায় এসে রক্তের স্বাভাবিক গতিপথে বাধা দেয় এবং ভাল্ভের ওপর বাড়তি চাপ দেয়। ফলে ভাল্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শিশুর ঠোঁট, জিহ্বা নীল হয়ে ওঠে, যাকে সায়ানসিস বলে।
করণীয় কি : ছিদ্র ছোট হলে কিছু ওষুধ খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শিশুর প্রতি বেশি যত্নবান হতে হবে, খেলাধুলা থেকে বিরত রাখতে হবে, তাহলেই এই শিশু ভালো থাকবে। কিন্তু যদি ছিদ্র বড় হয়, সে ক্ষেত্রে ওষুধ দিয়ে ভালো করা যায় না, যত শিগগির সম্ভব অপারেশন করালে শিশু স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায়। দেরি করে চিকিৎসা শুরু করলে নানা ধরনের কমপ্লিকেশন বা জটিলতা দেখা দেয়। ফলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।
কাজেই উপরোক্ত লক্ষণ দেখা দেয়ামাত্রই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত, কারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া হার্টের এসব সমস্যা নির্ণয় করা সম্ভব নয় ।