ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মুক্তিযোদ্ধার সদন জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়ার দায়ে সাকিব আহম্মেদ নামের এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার নামে মুক্তিযোদ্ধার সদন জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিযোগ পাওয়ায় কতৃৃপক্ষ তাকে বহিস্কার করে। অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ২৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে ও উপচার্যের বিশেষ ক্ষমতা বলে রোববার বিকালে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্টার এস এম আব্দুল লতিফ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে সাকিব আহম্মেদ নামে এক শিক্ষার্থী তার পিতা এ্যাডভোকেট আজিজুর রহমানের নামের সাথে মিল রেখে মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান ঝিনাইদহ জেলার খাজুরা গ্রামের মৃত্যু আরিফ হোসেন বিশ্বাসের ছেলে। অন্যদিকে সাকিব আহম্মেদের পিতা এ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ড থানার, মাকিমপুর গ্রামের শামসুদ্দিন লস্করের ছেলে। ওই শিক্ষার্থীর পিতার নাম ঠিক থাকলেও দাদার নাম অমিল পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এছাড়া ভর্তি কাগজ পত্রে ঐ শিক্ষার্থী তার স্থায়ী ঠিকানা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকম লিখেছেন কোন স্থানে মাকিমপুর, ঝিনাইদহ আবার কোনো স্থানে গ্রাম খাজুরা, উপজেলা হরিনাকুন্ড, জেলা ঝিনাইদহ। মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতি করে ভতি হওয়ার এ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ উঠলে এর পরিপেক্ষিতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক ও একাডেমিক শাখার প্রধান উপ রেজিষ্টার এ টি এম এমদাদুল আলম।
তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান ও যাচাই বাছাই শেষে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর রশিদ আসকারির নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনের নির্ভরযোগ্যতার তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবং উপচার্যের বিশেষ ক্ষমতা বলে সাকিব আহম্মেদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রেজিষ্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ। তার বহিস্কারের বিষয়টি আগামী সিন্ডিকেটে রিপোর্ট করা হয়েছে বলে তিনি জানান। সিন্ডিকেট বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর তার এ বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে। তবে এখন থেকে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করতে পারবে না।