নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদে ২ কর্মকর্তার কুপ্রস্তাবের শিকার নারী সহকর্মী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
কুপ্রস্তাব দেয়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এক নারী কর্মচারী। এর আগে ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে মৌখিকভাবে এ দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
মঙ্গলবার রাতে ওই নারী কর্মচারী জেলা পরিষদের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। চাকরিতে নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার ঘটনা জানাজানি হলে সর্বত্র ব্যাপক সমালোচিত হয়।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী নারী বলেন, আমি জিডিতে বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। ৯ মাস ধরে ৫ হাজার টাকা বেতনে জেলা পরিষদে তথ্য সহায়ক হিসেবে চাকরি করে আসছি। আমার এক ছেলে সন্তান আছে। স্বামী সৌদী প্রবাসী। বেতন অল্প হওয়ায় আমি আর্থিক সমস্যায় দিন যাপন করছি।
বিষয়টি প্রশাসনিক কর্মকর্তা কেএম রাসেদুজ্জামানকে জানিয়ে বেতন বৃদ্ধির দাবি জানাই। এতে তিনি আমার ছেলের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়ার কথা বলে কুপ্রস্তাব দেয়। আমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যাই। পরে সে পুনরায় ডেকে নিয়ে বলেন ভেবে চিন্তে দেখো লাভবান হবে।
এরপর বিষয়টি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মামুন চৌধুরী স্যারকে জানাই। তিনি কথা শুনে বেশ কিছুক্ষণ তার অফিসে দাঁড় করিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন। এক পর্যায়ে নানা প্রলোভন দেখিয়ে খালেদ মামুন চৌধুরী স্যারও আমাকে কুপ্রস্তাব দেন।
এতে বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা আমাকে প্রশাসক স্যারকে জানানোর জন্য বলেন। এরপর প্রশাসক আব্দুল হাই স্যারকে লিখিতভাবে জানাই। এতে দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করার চেষ্টা করছে। বিষয়টি জিডিতে উল্লেখ করে ভবিষ্যতের জন্য একটি জিডি করেছি। ফতুল্লা মডেল থানার জিডি নং ৬৬৪/১৬।
এদিকে অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট দাবি করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মামুন চৌধুরী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা কেএম রাসেদুজ্জামান জানান, একটি চক্র আমাদের দুইজনকে জেলা পরিষদ থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। এ জন্য নারী কর্মচারীকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মানহানিকর অভিযোগ তুলে হয়রানির চেষ্টা চলছে।
কেএম রাসেদুজ্জামান জানান, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। তবে কী কারনে তাদের বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করছে তার কোন ব্যখ্যা বা যুক্তি দেখাতে পারেননি খালেদ মামুন চৌধুরী ও কেএম রাসেদুজ্জামান।
জিডি গ্রহণের সতত্যা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, ঘটনা তদন্তে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।