‘উদ্ভিদ জাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০১৬’ খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে। এরপর মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের খসড়াটি উত্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর আইন আকারে পাসের জন্য উঠানো হবে জাতীয় সংসদে।
‘উদ্ভিদ জাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০১৬’ খসড়ার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বাংলানিউজকে বলেন, আইনের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে, আইনটি সামান্য ফাইন টিউনিং করে (ঘঁষা মাজা) করতে একটি কমিটি করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন (শিক্ষানবিস কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও বিভাগীয় পরীক্ষা এবং সিনিয়র স্কেলে পদোন্নতি পরীক্ষা) বিধিমালা -২০১৬ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সচিব কমিটির সভায় সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা- ২০১৬ খসড়া অধিকতর যাচাই-বাছাইসহ পর্যবেক্ষণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ফেরত দিয়েছে সচিব কমিটি। অপরদিকে, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবা ট্রাস্ট আইন-২০১৬ সচিব কমিটিতে উত্থাপনের কথা থাকলেও তা উত্থাপন করা হয়নি।
কৃষক অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ
উদ্ভিদ জাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান রেখে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি ‘উদ্ভিদ জাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০১৬’ খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘উদ্ভিদ জাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০১৬’ এর খসড়া প্রণয়ন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
এ আইনে উদ্ভিদ জাতের (কৌলিসম্পদ) সংরক্ষণ, অপব্যবহার রোধ ও এ বিষয়ে কৃষকের অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে। আইনের খসড়া অনুযায়ী ‘উদ্ভিদ জাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ’ গঠন করা হবে। কর্তৃপক্ষের একটি পরিচালনা বোর্ড থাকবে। বীজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন অংশীদার প্রতিনিধিত্বকারীদের সমন্বয়ে গঠিত এ বোর্ডে একজন সভাপতি এবং ১২ জন সদস্য থাকবে। তবে, সরকার এ বোর্ডের সদস্য কমাতে-বাড়াতে পারবে। পদাধিকার বলে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এ বোর্ডের সভাপতি হবেন।
কর্তৃপক্ষ উদ্ভিদ প্রজননবিদদের অধিকারের স্বীকৃতি হিসেবে উদ্ভিদ জাত সংরক্ষণ সনদ ও জাতের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। কৃষক অধিকার প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ গ্রহণ, জিন তহবিল গঠন, আইনের প্রয়োগ নিয়মিতভাবে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন করবে কর্তৃপক্ষ।
আইন কার্যকরের হলে ১০ বছরের মধ্যে সব ধরণের উদ্ভিদের গণ (জেনাস) ও প্রজাতির জাত সংরক্ষণ করা হবে। আইন অমান্যকারীদের আদালতের মাধ্যমে শাস্তিও দেবে কর্তৃপক্ষ।
মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে উদ্ভিদ জাতের অপব্যবহার করলে সর্বোচ্চ শাস্তি- দুই বছর কারাদণ্ডের ব্যবস্থা রাখার বিধান করা হয়েছে খসড়া আইনে।
খসড়া আইনে সংরক্ষিত উদ্ভিদ জাতের জাতীয় নিবন্ধন, উদ্ভিদের গণ ও প্রজাতি সংরক্ষণ, প্রজননবিদের অধিকারের মেয়াদের বিষয় বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।