ফতুল্লার ২৪ ইট ভাটার বিরুদ্ধে মামলা

ফতুল্লা প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জে ২৪টি ইটভাটার বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ। পণ্যের গুণগত মান যাচাই ব্যতীত ও বিএসটিআই এর লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন না করে উল্লেখিত পণ্য বিক্রয় ও বিতরণ অব্যাহত রাখায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক কেএম হানিফ। মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, সোমবার বিএসটিআইয়ের ঢাকা ফিল্ড অফিসার(সিএম) মো. রেজানুর রহমান বাদী হয়ে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাগুলো দায়ের করেন।

বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক কেএম হানিফ জানান, প্রতি তিন বছর পর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিয়ে ব্রিক ফিল্ডের ইট উৎপাদন, বিক্রয়, বিতরণ করার আইন রয়েছে। কিন্তু এসব ইট খোলায় গিয়ে দেখা যায়, বিএসটিআই অনুমোদিত ইটের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা, প্রয়োজনীয় পানি শোষন ও উত্তমরূপে পোড়ানো ব্যতিত উৎপাদ, বিক্রয় ও বিতরণ করছে। অভিযুক্ত ২৪টির মধ্যে পাগল এলাকার দু’একটি ইট খোলায় ২০১০-২০১২ পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে বক্তাবলী ও পঞ্চবটি এলাকার একটি ইট খোলা কোন লাইসন্সেই নেয়নি। ফলে আইন লঙ্গনের অপরাধে ওই সব ইট খোলার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ উৎপাদন, বিক্রয় বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যেসব ইট খোলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে সেগুলো হলো- মেসার্স আলহাজ্ব নাসিরউদ্দিন এন্ড সন্স, উত্তর গোপালনগর, বক্তাবলী (মালিক- জাহিদ হাসান রুবেল), মেসার্স জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ, পূর্ব গোপালনগর, বক্তাবলী (মালিক- হাজী মো. জয়নাল আবেদীন), মেসার্স নজরুল ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং, চর নবীনগর (মালিক- হাজী বশির আহমেদ প্রধান), মেসার্স নিজামউদ্দিন ব্রিকস, পূর্ব গোপালনগর (চরনবীনগর) (মালিক- মো. নিজামউদ্দিন প্রধান), মেসার্স নবীন ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারার, বক্তাবলী গুদারাঘাট সংলগ্ন, বক্তাবলী (মালিক- হাজী মো. আবুল হোসেন ও মো. তৈয়ব আলী ভূইয়া), মেসার্স আজাদ এন্টারপ্রাইজ, বক্তাবলী, গুদারাঘাট (মালিক- হাজী সামাদ আজাদ), মেসার্স মা ব্রিকস ফিল্ড, বক্তাবলী, রাজাপুর (মালিক- ইব্রাহিম খলিল, মো. খোরশেদ), মেসার্স এসবিএম ব্রিকস, দাপা (মালিক- মো. শাহাবউদ্দিন), মেসার্স এমএ ব্রিকস, আলীগঞ্জ, শৈলকুরীয়া (মালিক- মো- আকবর আলী), মেসার্স এসবিএম ব্রিকস, দাপা, শৈলকুরীয়া (মালিক- মো. নিজামউদ্দিন), মেসার্স এসএস ব্রিকস, পূর্ব গোপালনগর (চরনবীনগর) (মালিক- হাজী মো. সালাউদ্দিন), মেসার্স মা আবেদুন্নেসা ব্রিকস ফিল্ড, চররাজাপুর, বক্তাবলী (মালিক- হাজী খায়রুল ইসলাম), মেসার্স এসইউএ ব্রিকস, বক্তাবলী (মালিক- হাজী বোরহানউদ্দিন), মেসার্স এসইউএ ব্রিকস, দাপা, শৈইলকুড়িয়া, আলীগঞ্জ (মালিক- হাজী মো. বোরহান উদ্দিন), মেসার্স পপুলার ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারার, দাপা, ইদ্রাকপুর, শৈলকুড়িয়া (মালিক- হাজী মো. সামসুজ্জামান), মেসার্স এনবিসি ব্রিক ফিল্ড, পাগলা বাজার (রেল লাইন) (মালিক- হাজী তোফাজ্জেল হোসেন), মেসার্স নিউ ন্যাশনাল ব্রিক কোম্পানী (প্রা:) লিঃ, কামালপুর, ধোপাতিতা (মালিক- হাজী আবু নাসের ওয়াহীদ), মেসার্স খাদিজা ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং, বক্তাবলী (চর নবীনগর) (মালিক- আবু সাইদ), মেসার্স চিশতীয়া ছাবেরিয়া ব্রিকস, বক্তাবলী (মালিক- আব্দুর রহমান বেপারী), মেসার্স বক্তাবলী ব্রিকস ফিল্ড, চররাজাপুর, বক্তাবলী (মালিক- মো. জাকির হোসেন), মেসার্স মা ব্রিক ফিল্ড, ডিগ্রীরচর, আলীরটেক, সদর (মালিক- হাজী মো. খায়রুল ইসলাম), মেসার্স আব্দুল্লাহ বিকস সাপ্লাইয়ার (পুরাতন), মেসার্স মমিন ব্রিক এন্ড কোং (নতুন), দাপা, ইদ্রাকপুর (মালিক- হাজী নূরুল ইসলাম), মেসার্স আব্দুল্লাহ ব্রিকস সাপ্লায়্যারস, পাগলা, ভিটাপাড়া (মালিক- হাজী নূরুল ইসলাম) ও মেসার্স আব্দুল্লাহ ব্রিকস সাপ্লায়্যারস-২, পাগলা, ভিটাপাড়া (মালিক- হাজী নূরুল ইসলাম)।

মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয়েছে- ফতুল্লার পাগলা, পঞ্চবটি ও বক্তাবলী এলাকার ২৪টি ইট উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান পণ্যের গুণগত মান যাচাই ব্যতীত ও বিএসটিআই এর লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন না করে উল্লেখিত পণ্য বিক্রয় ও বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে গত ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন এসব ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। যা কিনা “বিএসটিআই অর্ডিন্যান্স ১৯৮৫ এবং সংশোধিত (আইন) ২০০৩” এর ২৪ ধারার পরিপন্থী এবং ৩১এ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।