১০ বছরের শেষ হয়নি পাবলিক লাইব্রেরী কমপ্লেক্স নির্মান কাজ

মাহাবুবুর রহমান: আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর ঠিকাদারদের মোনাফা, এবং বাজেট সংকটের ফলে ১০ বছরেও নির্মিত হয়নি কক্সবাজারে পাবলিক লাইব্রেরী কাম ইনস্টিটিউট কমপ্লেক্স নির্মান কাজ। এর ফলে কক্সবাজারের সাংস্কৃকিত অংঙ্গন সম্পূর্ন স্থবির হয়ে পড়া ছাড়াও নতুন প্রজন্মের মেধা বিকাশের সব সব খেত্রে বন্ধ হয়ে আছে। সচেতন মহলের দাবী পরিপূর্ন ভাবে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী চালু না হওয়ায় শধু সাংস্কৃতিক সংগঠন নয় মুক্তিযুদ্বের চেতনায় বিশ্বাষী রাজনৈতিক ও চরম ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। তাই খুব দ্রুত বাকি নির্মান কাজ শেষ করে পাবলিক লাইব্রেরী চালু করার দাবী জানান তারা।
কক্সবাজার জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও জেলা খেলাঘরের সাধারন সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন পাবলিক লাইব্রেরী আমাদের চেতনা ও প্রেরনার উৎস। এই পাবলিক লাইব্রেরীর মাঠ থেকেই আমরা মুক্তিযুদ্বের চেতনার শিক্ষা নিয়েছি এবং পরে আরো অনেক অনেকে মাঝে তা বিলিয়ে দিয়েছি। এই পাবলিক লাইব্রেরীতে এখন যারা জেলা এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা সবাই আসতো এবং এখানে তাদের রাজনৈতিক এবং সব কিছুর কর্মসূচী ঠিক করতো। কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয় দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে পাবিলক লাইব্রেরী সংস্কারের নামে বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে একটি বড় প্রজন্ম গেপ হয়ে গেছে। আমি নিশ্চিত যদি পাবলিক লাইব্রেরী সচল থাকতো তাহলে আরো অনেক তরুন চেতনার মে আসতো।
কক্সবাজার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সত্যপ্রিয় চৌধুরী দোলন বলেন পাবলিক লাইব্রেরী থেকেই এক সময় আমরা সৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছি। প্রতিদিন সন্ধ্য হলে এখানে বসেই আমরা সৈরাচার বিরোধী নতুন কর্মসূচী ঠিক করতাম। এছাড়া পরবর্তিতে এই পাবলিক লাইব্রেরীতে নিয়মিত সাহিত্য আড্ডা, কবি সাহিত্যিক দের আসা যাওয়া ছাড়া, বছরে কমপক্ষে ২/৩ টি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং মাসে কয়েক টি নাটক থাকতো। এক কথায় পাবলিক লাইব্রেরীকে ঘিরেই কক্সবাজারের রাজনৈতকি সাংস্কৃতিক সামাজিক জাগরণ শুরু হয়েছে। পরে তত্বাবধায়ক সরকারের সময় তৎকালীন উপদেস্টা রাশেদা কে চৌধুরী ২০০৭ সালের দিকে পাবলিক লাইব্রেরীকে ভেঙ্গে আধুনীক কমপ্লেক্স করার কাজ শুরু করে সে থেকে আজ পর্যন্ত কাজ টি ঝুলে আছে। এতে পুরু সাংস্কৃতিক অংগন স্থবির হয়ে পড়ে আছে। ১০ বছর কম সময় না, এর মধ্যে একটি বড় প্রজন্ম সাংস্কৃতিক ও মুক্তিযুদ্ব ভিত্তিক রাজনৈতক চেতনা থেকে দূরে আছে।
নাট্য নির্দেশক স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী ছিল সকল মুক্তবুদ্বির চর্চার প্রাণ কেন্দ্র। কিন্তু সেটি আজ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে মনে হয় ভাল ভাবে নিশ্বাষ নিতে পারছিনা। এই পাবলিক লাইব্রেরীতে নিয়মিত সন্ধ্যা হলেই আড্ডা বসতো সেই পরিবেশ এখন আর নেই। এছাড়া নিয়মিত প্রতিযোগিতা হতো এর মধ্যে নিয়ে বেরিয়ে আসতো প্রতিভাবান প্রজন্ম। যারা আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে কক্সবাজারের রাজনৈতিক অংগন। আমার মনে হয় সবাই মিলে যারা পাবলিক লাইব্রেরী নির্মান কাজের দায়িত্বে আছে তাদের তাগাদা দিলে ভাল হয়। এখানে একটি বিষয় মাঝে মধ্যে শুনি মুলত ঠিকাদারদের লাভের হিসাব নিকাশ করতে গিয়েই নির্মান কাজ শেষ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য এড, তাপস রক্ষিত বলেন পাবলিক লাইব্রেরী নির্মান নিয়ে আমি খোজ খবর রাখি, চেস্টা করি কাজটা দ্রুত শেষ করার জন্য। নির্মান ব্যায় ১২ কৌটি টাকার মধ্যে ৮ কৌটি টাকার কাজ শেষ হয়েছে বাকি কিছু কাজ আছে সেটা জেলা পরিষদ একটু উদ্যেগি হলেই শেষ হয়ে যেত। আমার মতে জেলা পরিষদের আন্তরিকতা হলে পাবরিক লাইব্রেরীর নির্মান কাজ ৩ মাসের মধ্যে শেষ হবে। এতে কক্সবাজারে আবারো মুক্ত চিন্তার খেত্র বাড়বে। এবং মুক্তযুদ্বের চেতনায় বিশ্বাষী প্রজন্ম তৈরিতে সহায়ক হবে।
এদিকে চকরিয়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন পাবলিক লাইব্রেরী নির্মান কাজ এত দিন ঝুলে থাকা আমাদের জন্য বড় দূর্ভাগ্য জনক। এটি আমাদের চেতনা ও প্রেরণার প্রধান স্থান তাই খুব দ্রুত পাবলিক লাইব্রেরী সচল করার দাবী জানান তিনি।