স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে নারীরা: মনিরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর দক্ষিণখানে আশকোনার ‘সূর্য ভিলা’ থেকে আত্মসমর্পণকারী নারীরা স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে এসেছেন বলে দাবি করছে পুলিশ।

কাউন্টার টেরোরিজন অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নারী জঙ্গিরা স্বামীর প্ররোচনায় এবং আশ্রয় পাওয়ার জন্যই জঙ্গিবাদে এসেছেন। স্বেচ্ছায় কোনো নারী জঙ্গিবাদে এসেছেন বলে আমরা কোনো তথ্য পাইনি।’

মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আশকোনায় যে নারী জঙ্গি আত্মঘাতী হয়েছে সে মূলত হতাশা থেকে এই পথ বেছে নিয়েছিল বলে আমরা ধারণা করছি। কারণ তার স্বামী মারা যাওয়ার পর জঙ্গি সুমনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সুমনও কিছুদিন আগে গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এখন তার আর কোনও আশ্রয় থাকবে না বলেই সে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগে আজিমপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া নারীরা তাদের জবানবন্দিতে স্বামীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে।’

গত ২৪ ডিসেম্বর আশকোনার সূর্য ভিলায় অভিযান চালিয়ে দুেই নারীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে সিটিটিসি ইউনিট। এরা দুজনই জঙ্গিদের স্ত্রী। দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদে কী ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে কিছু ভাসা ভাসা তথ্য পাওয়া গেছে এবং কয়েকজন জঙ্গির সাংগঠনিক নাম পাওয়া গেছে। যারা এ বাসায় আসা যাওয়া করতো। তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ বাসায় চারটি পরিবারের সদস্য থাকতো। যেহেতু মুসা বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল সে সূত্রে এটি মুসারই বাসা। মুসা সাংগঠনিক কাজে নানান জায়গায় ঘুরে বেড়াতো। মাঝেমধ্যে এই বাসায় আসতো। এটি অফিস কাম বাসা হিসেবে ব্যবহৃত হতো।  তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’

সিটিটিসির অভিযানে বাড়িটি থেকে পুড়িয়ে ফেলা ১২ লাখ টাকাসহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে মনিরুল বলেন, এসব কোথা থেকে আনা হয়েছিল এবং তাদের পরিকল্পনা কী ছিল তা মুসাকে না ধরা পর্যন্ত পরিষ্কার করে কিছু বলা যাবে না। প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি বড়দিন উপলক্ষ্যে তারা কোথাও হামলার পরিকল্পনা করেছিল। কারণ সুইসাইডাল ভেস্ট ও গ্রেনেডগুলো রেডি করে রাখা হয়েছিল।

তিনি বলেন, জঙ্গিদের আস্তানা এবং নেতাকর্মী ও এক্টিভিস্টরা ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসছে। আমরা নিয়মিত নজরদারি মাধ্যমে জঙ্গিদের দমন করার চেষ্টা করছি।

শুক্রবার রাতে পূর্ব আশকোনায় সূর্য ভিলা নামের এক বাড়িতে গড়ে ওঠা জঙ্গি আস্তানায় পুলিশ অভিযান চালায়। ওই সময় দুই নারী জঙ্গি আত্মসমর্পণ করলেও একজন আত্মঘাতী হয়ে মারা যায়। বাসার ভেতরও আফিফ কাদেরী নামেন এক কিশোর আত্মঘাতী হয়ে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে গণমাধ্যমে খবর বের হলেও ময়নাতদন্তে বেরিয়ে এসেছে ওই কিশোর গুলিতে মারা গেছে।