সমালোচকদের শিক্ষার মানোন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

একাত্তর লাইভ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের শিক্ষার মানোন্নয়নে এগিয়ে আসার অাহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কোনও কিছুই রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়।
শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্নস্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। খবর বাসসের
তিনি বলেন, ‘যারা শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই- কোনও কিছুই রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। আগে তারা (সামালোচকবৃন্দ) ভলান্টিয়ার সার্ভিস দিন, সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য কিছু করুন, শিক্ষা দিন। তারপর কথা বলুন।’
প্রধানমন্ত্রী সমালোচকদের কাছে এ প্রশ্ন রাখেন, ‘শিক্ষার মানের মাত্রাটা আসলে কী?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নতি একদিনে সব হয়ে যায় না। সেজন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা চাই সব ছেলে-মেয়ে পরীক্ষা দেবে, এ জন্যই পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণিতে পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষার ব্যবস্থা। অথচ এই দুই পরীক্ষা নিয়েও অনেকে কথা বলেন।’
পিইসি-জেএসসির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভীতি কমছে মত দিয়ে তিনি বলেন, এতে করে তাদের মধ্যে সাহস জন্মাচ্ছে। দিন দিন রেজাল্টও ভালো হচ্ছে, পাসের হারও বাড়ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন ক্লাস থেকে কিছু ছেলে-মেয়ে বেছে, তাদের প্রস্তুত করা হতো বৃত্তির জন্য। তাদের ভালো টিফিন দেওয়া হতো, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা সেটি পেত না। বৃত্তির জন্য শিক্ষকরা যাদের বাছলেন না, তাদের মধ্যেও তো মেধাবী থাকতে পারে। কেউ বৃত্তি পাবে, বাকিরা বঞ্চিত থাকবে- এই পদ্ধতি ঠিক করতেই পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণিতে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে’, যোগ করেন শেখ হাসিনা।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। প্রাধমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসেইন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাকে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার এ লক্ষ্য অর্জনে বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি জেন্ডার সমতা অর্জনেও কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সত্যই একটি আনন্দের দিন। আজ আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়েছি। আপনারা জানেন আমরা সরকার গঠনের পর থেকেই মানুষের মৌলিক অধিকার সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কারণ আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আর সেই দারিদ্র্যমুক্তি ঘটবে যদি আমরা সকলকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে পারি। শিক্ষাই হচ্ছে দারিদ্র্যমুক্তির মূল ভিত্তি, যেটা আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ২৪৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছি। এ বছরও ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫ খানা বই প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্থরের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতগুলো একসঙ্গে ছাপানো এবং বিতরণ করা একটি বিশাল ব্যাপার। এমনকি ২০১৪, ২০১৫ এবং ২০১৬ বিএনপির আগুন সন্ত্রাসের মাঝেও আমরা জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনটিতেই সারাদেশের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে সমর্থ হয়েছিলাম।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার এই উদ্যোগ ব্যর্থ করার জন্য ছাপাখানা পুড়িয়ে দেওয়া সহ নানাবিধা ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেন।