একাত্তর লাইভ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সরকার দলীয় সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানক গাইবান্ধা-১ আসনের সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে জামায়াত শিবিরকে দায়ী করেছেন। রোববার সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লিটনের মরদেহ দেখতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি নিশ্চয়ই জামায়াত শিবিরের চক্রান্ত। তারাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। জামাত শিবির এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দেশকে আবার অস্থিতিশীল করে তোলা চেষ্টা করছে।’
নানক বলেন, ‘লিটন যে এলাকার এমপি তা জামায়াত শিবিরের ঘাঁটি ছিল। সেই ঘাঁটি ভেঙে জনগণের ভালোবাসা নিয়ে সে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন লিটন। তাই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে।’
রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকসহ দলের আওয়ামী লীগের বেশকিছু নেতাকর্মী এসময় তার সঙ্গে ছিলেন। লিটনকে হত্যার খবর পেয়ে নানক ঢাকা থেকে রংপুরে যান।
ময়না তদন্তের পর রংপুরে লিটনের প্রথম নামাজে জানাজা হবে। দুপুরের পর হেলিকপ্টারে করে লিটনের লাশ ঢাকায় নেওয়া হবে। লিটনের লাশ রাতে হিমঘরে রাখা হবে। সোমবার সকালে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে সোমবারই লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে আবার জানাজা হবে। পরে তাকে গ্রামেই দাফন করা হবে বলে জানান নানক।
এমপি লিটনকে গতকাল সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনার পর এমপি লিটনের গ্রাম সাহাবাজ, সর্বানন্দ, বামনডাঙ্গাসহ পুরো এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নিজ বাড়িতে লিটনকে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি এলাকাবাসীও ক্ষুব্ধ পুলিশের প্রতি। নিজ বাড়িতে একজন এমপিকে প্রকাশ্যে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কীভাবে সহজেই পালিয়ে গেল তা মানতে পারছেন না দলীয় নেতা কর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষ।
এদিকে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এমপি লিটনের বাড়িসহ বামনডাঙ্গা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কের মোড়ে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
একজন এমপিকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা এলাকা থেকে কীভাবে পালিয়ে গেল জিজ্ঞেস করলে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিয়ার রহমান্ একাত্তরলাইভ ডটকমকে জানান, এমপি লিটনকে গুলি করে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তবে কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। হত্যাকারীদের শনাক্তে পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান চালাচ্ছে। হত্যাকারী যেই হউকনা কেন তাকে আইনের কাঠগড়ায় অবশ্যই দাঁড় করানো হবে।
ওসি আরও জানান, রংপুর পুলিশ রেঞ্জের বিভাগীয় কমিশনার (ডিইআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুখসহ সর্বোচ্চ মহলের তদারকিতে আমরা আসামীদের ধরার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাহাবাজ গ্রামে এমপি লিটনকে তার বাড়িতে ঢুকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। রাত সাড়ে ৭টার দিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।