একাত্তরলাইভ ডেস্ক : বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘকে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রস্তুত করার অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এসব কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বুধবার (১৬ জুন) নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে এ বৈঠক হয়। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ফেসবুক পেজে দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “মানবিক বিবেচনায় আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে এই সংকটের সমাধান নিহিত রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের ওপর, যা গত চার বছরে সম্ভব হয়নি। আমরা চাই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘ স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক।”
রোহিঙ্গাদের চার বছর বাংলাদেশে অবস্থানের নেতিবাচক দিক, বিশেষ করে কক্সবাজারের স্থানীয় লোকজনের ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “খুব দ্রুত যদি প্রত্যাবাসন শুরু না হয়, তাহলে এটি কেবল এই এলাকারই সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে না, বরং তা এই অঞ্চল ও এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করবে।”
বিশেষ দূত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং অচিরেই যেন প্রত্যাবাসন কাজ শুরু করা যায়, সে জন্য জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ও বাইরের সব অংশীজনের সঙ্গে বিশেষ দূত যোগাযোগ ও আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এছাড়া ভাসানচর পরিদর্শন করতে বিশেষ দূত তার আগ্রহের কথাও জানান।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রুয়ার সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে মিলিত হন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ফেসবুক পেজে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, সুদীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের তাৎপর্যপূর্ণ অংশগ্রহণ ও সাফল্যমণ্ডিত অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন ল্যাক্রুয়া। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সম্পর্ক আগামী দিনগুলোয় উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। শান্তিরক্ষা মিশনগুলোয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারত্ব ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেন ল্যাক্রুয়া।
উভয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা অংশ নেন।