কক্সবাজার প্রতিনিধি:
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দূর্নীতি মামলা রায় আজ। এ্ই রায়কে ঘিরে সারা দেশের রাজনৈতিক অজ্ঞন এখন উত্তপ্ত। এরি অংশ হিসাবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের রাজনৈতিক মাঠ বেশ উত্বপ্ত। ফলে দীর্ঘ মিয়াদী হরতাল অবরোধের ভয়ে তড়ি ঘড়ি করে কক্সবাজার ত্যাগ করছেন পর্যটকরা। ব্যবসায়িদের দাবী ইতি মধ্যে সব হোটেলের বুকিং বাতিল করে চলে গেছে পর্যটকরা বলতে গেলে পর্যটক শুন্য এখন কক্সবাজার। এতে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান হোটেল মোটেল ব্যবসায়িরা।
কক্সবাজার হোটেল সুগন্ধার ম্যানেজার নুরুল আবছার বলেন,৮ র্ফেরুয়ারী বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে হঠাৎ করে বদলে গেছে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা আমাদের হোটেলে ৪৫ টি রুমের মধ্যে গত ২ মাসে বেশ ভাল ব্যবসা হয়েছে কিন্তু ৫ ফেরুয়ারী থেকে সব পর্যটকরা হোটেল ছেড়ে চলে গেছে। ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারী কোন রুমে পর্যটক নেই, কয়েক টি রুমে স্থানীয় মানুষ ছাড়া। যদিও আমাদের কিছু নির্দিস্ট গেস্ট থাকে তবে পর্যটক না থাকলে ভাল ব্যবসা করা যায় না। তিনি বলেন যাওয়ার সময় অনেক পর্যটকের সাথে বলা বলে জানা গেছে রায় নিয়ে পুরু দেশের মানুষ আতংকে আছে অনেক সময় দীর্ঘ মিয়াদী হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচী হতে পারে তাই অনেকটা আগে ভাগেই বাড়ি চলে যাচ্ছে মানুষ। এর ফলে আমাদের ব্যবসার মারাত্বক ক্ষতি হয়েছে। গতকাল সকালে হোটেল সুগন্ধাতে গিয়ে বাসের উদ্দ্যেশে যাত্রা করা চট্টগ্রাম আনোয়ারার বাসিন্দা নাজমুল আহসান বলেন আমরা পুরু পরিবার কয়েক দিনের জন্য ছুটি কাটাতে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে শুনতে পাচ্ছি খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। তাই বাড়ি থেকে আত্বীয় স্বজন ফোন করছে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে তাই চলে যাচ্ছি। আর আমাদেরও মনে হচ্ছে এখানে থাকাটা কোন ভাবেই নিরাপদ নয়। যে কোন মূহুর্তে হরতাল অবরোধ সহ নানান কর্মসূচী আসতে পারে তাই রুম বুকিং বাতিল করে চলে যাচ্ছি।
গ্রীন লাইন কাউন্টারে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করা কুমিল্লার কলেজ শিক্ষক রফিকুল আলম বলেন আমি ২ দিনআগে কক্সবাজার এসেছি,৪ দিন থাকার কথা ছিল তবে এখন দেশের পরিস্থিতি ভাল না শুনে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যাচ্ছি। সাথে ছোট বাচ্চা আছে তাই কোন ঝুকি নেওয়া যাবে না তাই নিরাপদে বাড়ি পৌছাই হচ্ছে এখন প্রথম কাজ।
এদিকে হোটেল সী নাইটে এ গিয়ে দেখা গেছে সেখানে ও বেশির ভাগ বুকিং বাতিল করে চলে গেছে পর্যটকরা। আলাপ কালে হোটেল মালিক এফাজুল্লাহ বলেন ২/৩ মাস বেশ ভাল ব্যবসা হয়েছে আমরা বেশ ভাল ছিলাম কিন্তু হঠাৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়াতে মানুষ ভয়ে পড়েছে তাই রুম বুকিং বাতিল করে চলে যাচ্ছে আর আমাদেরও বলার কিছু নেই। কারন হরতাল বা অন্যকোন কারনে যদি তারা এখানে আটকা পড়ে সেটা কারো জন্য ভাল না তাই সবাই নিরাপদে বাড়ি পৌছাক সেটা আমরাও চাই। তবে ব্যবসার মারাত্বক ক্ষতি হয়েছে আর এই পরিবেশ আবার কখন ফিরে আসবে সেটা কেউ বলতে পারে না। তিনি বলেন শুধু আমার হোটেল না এখানে সব হোটেল থেকে পর্যটকরা চলে গেছে বলতে গেলে পর্যটক শুন্য হয়ে পড়েছে কক্সবাজার।
এদিকে পর্যটক শুন্য হওয়ার ফলে শুধুযে হোটেল মালিকরা ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে তা নয় এখানে সুটকি ব্যবসায়ি থেকে শুরু করে বার্মিজ মার্কেট ব্যবসায়ি ফাস্টফুডের দোকান সবাই অনেকটা হতাশ। কক্সবাজার বার্মিজ মাকের্ট ব্যবাসয়ি সমিতির সহ সভাপতি মং বা চিং বলেন,কয়েক দিন আগে বেশ ভাল ব্যবসা হয়েছে এখন বলতে গেলে দোকান খুলে বসে আছি, কোন গ্রাহক নেই বলতে গেলে আমরা আতংকে আছি। এতে আমাদের ব্যবসার মারাত্বক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির কোষাধক্ষ্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান বলেন,পর্যটন ব্যবসার প্রথম সর্ত হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভাল থাকতে হবে। মানুষ বেড়াতে এসে যদি অস্থিরতায় থাকে সেটা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। হঠাৎ করে বেগম খালেদা জিযার রায়কে কেন্দ্র করে দেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় কক্সবাজারে থাকা পর্যটকরা চলে যাচ্ছে সেটা সত্য। সব হোটেল থেকে এরকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন,বেশির ভাগ হোটেল এখন অনেকটা খালী, আর যারা বুকিং করিয়েছিল তারাও বুকিং বাতিল করে দিচ্ছে। মোট কথা পর্যটকরা সবাই এখন বেশ আতংকে নিরাপদে চলে যাচ্ছে।
এদিকে কক্সবাজার ট্যুারিষ্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, পর্যটকরা নিজেরা নিরাপদে থাকার জন্য হইতো কক্সবাজার ছাড়ছেন তবে কক্সবাজারে এখনো কোন অপ্রিতিকির ঘটনা ঘটেনি। আশা করি সামনেই পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা হয় এধরনের কোন ঘটান হবে না।