আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী মহামারিতে রূপ নেওয়া করোনাভাইরাসে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরো ১১ হাজার ৩৭৫ জন। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৯০ জন। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ২১ লাখ ৮২ হাজার ১৯৭ জন।
এদের মধ্যে বর্তমানে ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩৮১ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫৬ হাজার ৫৫৮ জন (৪ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৫ জন (৭৯%) সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
এদিকে নতুন করে প্রায় ১৩০০ মানুষের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করেছে চীন। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, উহানে করোনায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৩ হাজার ৮৬৯ জন। এ তালিকায় নতুন করে ১ হাজার ২৯০ জনের নাম যোগ করা হয়েছে। সংশোধন করা হয়েছে আক্রান্তের সংখ্যাও। নতুন ৩২৫ জন যোগ করে উহানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৩৩৩ জন।
চীনের মৃত্যুর সংখ্যা কয়েক সপ্তাহ ধরে ৩,৩০০ জনে স্থিতিশীল থাকলেও এখন এই সংখ্যা এক লাফে ৪,৬০০ জনে উঠেছে। এর কারণ হলো উহান শহরে, যেখানো সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল, সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৬৩২ যা আগের সংখ্যার চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি।
এত দিন এসব মানুষের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশে বিলম্ব হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে শিনহুয়া। প্রথম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগেই বাড়িতে মারা গেছেন এবং সে সময় তাদের অনেকেরই করোনার টেস্ট করা হয়নি।
করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ভাইরাসটির আক্রমণে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার হিসেবে যেকোনো দেশকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বৃহস্পতিবার দেশটিতে ৪ হাজার ৪৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির নিউইয়র্ক রাজ্যে প্রাদুর্ভাব ছড়িয়েছে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে মোট মৃত্যুর অর্ধেকেই হয়েছে শুধু এই রাজ্যেই। সেখানে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৫৭০ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। আর মোট মৃত্যু ৩৪ হাজার ৬১৭। করোনাভাইরাসে এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আক্রান্তের সংখ্যায় এর পরের অবস্থানে রয়েছে স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। জার্মানিতে মৃতের সংখ্যা কিছুটা কম হলেও বাকি দেশগুলোতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এ রাজ্যে শাটডাউনের মেয়াদ ১৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে যুক্তরাজ্যে আরো কমপক্ষে তিন সপ্তাহ লকডাউন জারি থাকবে বলে জানিয়ছে দেশটির সরকার। গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পক্ষ থেকে এমনটি জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব।