বিকল্পধারা থেকে বহিষ্কার বি. চৌধুরি-মাহী-মান্না

অনলাইনডেস্ক:শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ।

শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নুরুল আমীন ও বাদল।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের নুরুল আমীন বেপারীকে সভাপতি ও শাহ আহমদ বাদলকে মহাসচিব করে দলটি নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। নতুন সভাপতি নুরুল আমীন বেপারী বলেন, দু-একদিনের মধ্যেই তলবি সভা ডেকে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।

নতুন মহাসচিব শাহ আহমদ বাদল বলেন, সংবাদ সম্মেলনের জন্য আমরা প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে বুকিং দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের বুকিং বাতিল করা হয়েছে। এজন্য আমরা প্রেস ক্লাবের সামনেই আমাদের নতুন কমিটি ঘোষণা করতে হলো। তিনি আরো জানান, সংবাদ সম্মেলন না করার জন্য আমাকে মোবাইলে হুমকি দেয়া হয়েছে।

এর আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বাদ পড়ার পর বেকায়দায় পড়েন বিকল্পধারার শীর্ষস্থানীয় নেতারা। বিকল্পধারার একটি অংশ দলটির প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান এবং যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি. চৌধুরীকে বহিষ্কার করে পাল্টা-বিকল্পধারা গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। ৭১ সদস্যের একটি নতুন কমিটি ঘোষণারও প্রস্তুতি নেয় বিকল্পধারার বিদ্রোহী গ্রুপ।

নতুন বিকল্পধারার ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে যার আসছেন তাদের সিংহভাগই আগের কমিটির সদস্য বলে জানা গেছে। এদিকে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজার সঙ্গে বারিধারার বাসায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বি. চৌধুরী।

গত ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়। বৈঠকে ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসাসহ দলের অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নিজ দলের পুরনো কর্মীদের ধরে রাখার উদ্যোগ না নিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছেড়ে আসা ন্যাপ ও এনডিপিকে নিয়ে নতুন জোট গঠনে বৈঠক করছেন বি. চৌধুরী।

বিদ্রোহী গ্রুপের অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, মাহি বি. চৌধুরী আমাদের কারও সঙ্গে কোনো কথা না বলেই এককভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে বিকল্পধারার চেয়ারম্যান ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী এ ব্যাপারে ইতিবাচক ছিলেন। বাবার নাম ব্যবহার করে মাহী বি. চৌধুরীর সিদ্ধান্তে দলের অধিকাংশ নেতা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, নতুন উদ্যমে শুরু হওয়া বিকল্পধারা জাতীয় নির্বাচনের আগেই কাউন্সিল করে কমিটি দেবে। তবে যদি কোনো কারণে তা সম্ভব না হয় তবে নির্বাচনের পর কাউন্সিল হবে। বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় কমিটি ৭১ সদস্যের হলেও এখন রয়েছেন ২৫ থেকে ২৬ জন। এর মধ্যে কৃষিবিষয়ক সম্পাদক জানে আলম, সমবায়বিষয়ক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবলু, যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার জোবায়ের, প্রচার সম্পাদক প্রকৌশলী জুন্নু, কৃষক ধারার আহবায়ক চাষী এনামুল, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক শিপরা রহিম, সদস্য নুর মুহাম্মদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, আবদুল মতিনসহ ১৭ জন আমাদের সঙ্গে আছেন।

প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির সঙ্গে জড়িত বি. চৌধুরী ২০০৪ সালে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর দলত্যাগ করে বিএনপির আরেক নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানকে নিয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশ গড়ে তোলেন। প্রতীক বেছে নেন কুলা। প্রতিষ্ঠার ১৪ বছরে দলটিতে কোনো কাউন্সিল না হলেও দ্বিখণ্ডিত হলো দলটি।