শাহআলম শফি, কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার বরুড়ায় চিকুনগুনিয়া জ্বরে প্রায় শতাধীক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা যায়। উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এ নতুন (ভাইরাস) চিকুনগুনিয়া জ্বর।
বরুড়া উপজেলার একাধীক ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, প্রায় গ্রামে চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত বর্তমানে এ রোগীর সংখ্যা প্রায় শতাধীক। তাছাড়া এ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার ৩ নং (উ:) খোশবাস ইউনিয়নের বগাবাড়ীয়া গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমান ,সফিকুর রহমান,তাছলিমা বেগম, মাজেদা বেগম, কুলছুম আক্তার, সামির, সামিয়া, সিয়াম, কাকলি, ইমু, আবু তাহের, কাউছার, হাজী আব্দুস ছাত্তার, বাবুল, বিল্লাল,পপি,পাখি। কেমতলী গ্রামের আকবর, সুলতান, নূরনবী, জিহাদ, সুমন,বাশার। আগানগর ইউনিয়নের জগদাসার গ্রামের সাব্বির, জিহান, সানিয়া, ফাইমা, মাওয়া, শরীফ, আবু, শাকিল। সরাপতি গ্রামের জামাল হোসেন, রাসেল, ইসমাইল, কাশেম, সুজাত আলী, হাজী রিয়াদসহ আরো অনেকে রয়েছে।
চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রভাব বেশী হওয়ায় ইদানিং দেখা যাচ্ছে ঘরে ঘরে এর আতঙ্ক ছড়িয়ে পরছে। পরিবারের একজনের এ জ্বর হলে, দেখা যাচ্ছে বাকীরাও এ ভাইরাস আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মাথা ব্যথা, তার সঙ্গে প্রচন্ড ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। হাঁটুতে এবং হাত ও পায়ের গিরায় গিরায় প্রচন্ড ব্যথায় রোগীরা এমনকি হাঁটতে পর্যন্ত পারে না। মাংসপেশীতে ও পায়ের তলায়ও থাকে তীব্র ব্যথা, শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে যায়। অনেকে কয়েক মিনিট পরপর বমি করে। খাওয়ার রুচি থাকে না একেবারেই। জোর করেও খাওয়ানো যায় না রোগীকে। চিকুনগুনিয়া টোগা ভাইরাস গোত্রের ভাইরাস। মশাবাহিত হওয়ার কারণে একে আরবো ভাইরাসও বলা হয়। এসব মশা সাধারণত পানিতে জন্মায় এবং ভোরে ও সন্ধ্যায় মানুষকে কামড়ায়। এসব মশার কামড়ে মেদের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউই রেহাই পাচ্ছে না।
এমন অবস্থায় চিকিৎসকরা সাধারণ প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রোগীকে অবশ্যই বিশ্রাম নিতে হবে। সেই সাথে খেতে হবে প্রচুর পানি এবং তরল ধরনের খাবার। ডাব, তরমুজ এবং কমলাসহ পানি আছে এমন ধরনের ফল খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পাঁচ-সাত দিন র্পযন্ত জ্বর থাকতে পারে। তিন বেলা দু’টি করে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেলে জ্বর কমে যাবে কিন্তু ব্যথা কমতে সময় লাগবে বেশ কয়েকদিন।
এমনকি এক-দেড় মাস পর্যন্ত ব্যথা থাকতে পারে। কিন্তু এজন্য ভয় পাওয়ার কারণ নেই। চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্তে মৃত্যু ঝুঁকি আছে বলে এখনো জানা যায়নি। রোগীকে প্রচুর বলকারক খাবার খাওয়াতে বলেছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বাড়ির ভেতরে বা আশপাশে পানিযুক্ত ময়লা-আবর্জনা জমতে না পারে। কারণ, এসব স্থানেই এডিস প্রজাতির মশাগুলোর জন্ম হয়। তাছাড়া মশার উপদ্রব বেশি থাকলে অবশ্যই মশারী ব্যবহার করতে হবে। শুধু রাতে নয়, চিকিৎসকরা দিনের বেলায়ও মশারী টাঙানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
এবি ষয়ে বরুড়া উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে টি.এস আবদুল মজিদ জানান, এ পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত কোন রোগী আমরা পায়নি।