নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলা শাহী বাজারে দূর্ধর্ষ দুই কিলার মোক্তার ও তার সহযোগি মানিক ক্রসফায়ারে মৃত্যুবরণ করার ঘটনায় ব্যাপক গুঞ্জন থাকার পর আবার বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ফতুল্লা থানার নানা অপকর্মের হোতা রাইটার শহিদ নিজেই লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
এমন বিতর্কের ঘটনায় সংবাদপত্রকর্মীরা হাসপাতালের মর্গের সামনে উপস্থিত হলে দ্রুত বিতর্কিত রাইটার শহিদকে অন্যত্র সরিয়ে নেন দারোগা মিজান ও সাঈদ। রাইটার শহিদ কি করে ক্রসফায়ারে নিহতদের সুরতহাল রিপোর্ট করে এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান দায়িত্বরত পুলিশের কর্মকর্তারা।
জানা যায়, গত বুধবার সন্ধ্যার পর নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের দল ফতুল্লা থানার পাগলা শাহী বাজার এলাকায় সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী অভিযান চালালে সন্ত্রাসী ও কিলার বাহিনীর প্রধান মোক্তার ও তার লোকজন আতর্কিত হামলা চালায়। এমন হামলার পর পুলিশ গুলি চালালে পাল্টা গুলি চালায় কিলার মোক্তার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী । এক পর্যায়ে ডিবি পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে মারা যায় কিলার মোক্তর ও তার সহযোগি মানিক। একই ঘটনায় ডিবি পুলিশের এএসআই আজিজ সন্ত্রাসীদের সাথে গুলি বিনিময়ের সময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতেই ফতুল্লা থানা পুলিশ নিহতদের লাশ ময়না তদন্ত করতে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হলে বৃহস্পতিবার সকালে ফতুল্লা থানা পুলিশের দারোগা মিজান ও সাঈদ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করতে আসেন। সকাল থেকেই দারোগাদের সাথে অবস্থান নিয়ে ফতুল্লা থানার নানা অপকর্মের হোতা রাইটার শহিদ ওরফে বরিশাইল্লা শহিদ নিজেই লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ।
এমন খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে উপস্থিত হলে রাইটার শহিদকে দ্রুত সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায় পুলিশের সদস্যরা। মর্গে অবস্থান ও ক্রসফায়ারে নিহতদের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীতে বহিরাগত বিতর্কিত রাইটার শহিদের অবস্থান নিয়ে সাধারণ মানুষ অনেকেই প্রশ্ন তলে বলেন, লাশের সামনে সকাল থেকে নিহতদের স্ত্রী, আত্মীয় স্বজন কাউকে যেখনে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ, সেখানে এই বিতর্কিত ব্যক্তি সকল কাজ করছে কি করে ?
এমন বিতর্কিত রাইটার দিয়ে সুরৎহাল রিপোর্ট তৈরীর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দায়িত্বরত দারোগাদের কেউ কোন উত্তর দিতে চান নাই।
ক্রসফায়ারে নিহত মোক্তার ওরফে কিলার মোক্তারের স্ত্রী সুমা বেগম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে আমদেরকে লাশ দিয়ে দিবে বলেছে পুলিশ। এরপর দাফনের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। কান্না জড়িত কন্ঠে নিহতের স্ত্রী সুমা আরো জানায় আমাদের এখন কি হবে আমরা বুঝতে পারছি না । কে যে এই পথে গেলো। মোক্তর নিজেও মরলো আমাদেরকেও মাইরা থুইয়া গেলো । ওর ভাই বোন কারো সাথেও ওর ভালো সম্পর্ক ছিলো না । ক্রসফায়ারে নিহত মোক্তার ওরফে কিলার মোক্তারের পরিবারের সদস্যদের দেখা মিললেও নিহত মানিকের পরিবারের কাউকেই পাওয়া যায় নাই।
নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাথে ক্রসফায়ারে নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, টিম গঠন করে ময়নাতদন্ত শেষ করা হয়েছে। প্রাথমিকবাবে দেখা যায় নিহত মোক্তারের বুকে তিনটা ও পায়ের উড়ুতে একটি গুলি বিদ্ধ হয়েছিলো। অপর জন মানিকের বুকে পিঠে দুটি গুলি ও শরীরের অন্যান্য স্থানে আরো দুটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে ।