একাত্তরলাইভ ডেস্ক :দুঃসময়ে পরীমণির পাশে থেকে নেটিজনদের বাহবা কুড়াচ্ছেন নাট্য নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রোববার (১৩ জুন) যখন সংবাদ সম্মেলনে চোখের পানি ফেলছিলেন পরীমণি তখন তার পেছনে বসে চয়নিকা চৌধুরীও চোখের পানি ফেলেছেন। যা ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। বিপদে বন্ধুর পরিচয়—প্রবাদের প্রমাণ হয়ে রইলেন তিনি।
ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার দিন চয়নিকা উপস্থিত না থাকলেও কাছের মানুষ হিসেবে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় সেই ভয়ানক রাতের কথা। পরী যা বলেছেন সেটাই তিনি জানেন বলে জানালেন।
চয়নিকা বলেন, “সবার মতো আমিও পুরো ঘটনাটি সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত শুনেছি। তাই এই বিষয় নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। পরীমণি দেশের বড় তারকা। সে আমার মেয়ের মতো। তাই সংবাদ সম্মেলনে তিনি আমাকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে চলে গিয়েছিলাম। ঘটনাটি এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে চলে গেছে। আইনের প্রতি আমাদের ভরসা আছে। অপরাধীর বিচার হবে। সত্যটা মানুষ জানতে পারবে। আমি আশাবাদী মানুষ। বিশ্বাস করি, সুন্দর একটি সকাল হবে।”
ঘটনার চার দিন পরী বিষয়টি চেপে রেখেছিলেন ভয়ে। ওই সময়টায় তিনি যন্ত্রণাদায়ক এক পরিস্থিতির মধ্যে দিন পার করেছেন বলে জানান এই নাট্য নির্মাতা।
চয়নিকা বলেন, “চার দিন পরী ঘটনাটি নিজের ভেতর চেপে রেখেছেন। কাউকে বলেননি। এমনকি আমাকেও না। একা একা নিজের সঙ্গে ফাইট করেছেন তিনি। এটা খুব কষ্টের একটি ব্যাপার। আমি মনে করি, পরী একজন ফাইটার। তাছাড়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর যেভাবে সংবাদকর্মীরা এগিয়ে এসেছেন তাতে বোঝাই গেছে, সবাই তাদের নায়িকাকে কতো ভালোবাসেন! পরীর এই ঘটনা আমাদের আবারও মনে করিয়ে দেয়, এই দেশে নারীরা এখনও নিরাপদ নন।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরীর চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ করছেন অনেকে। তার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে নেতিবাচক মন্তব্যগুলো তাকে ভাবাচ্ছে কি না—জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, “আমি সবসময় নেতিবাচক জিনিস পরিহার করে চলি। এটা আমার খুব অপছন্দ। যারা এমন মন্তব্য করছেন তাদের ভেতর শিক্ষার অভাব রয়েছে। শুধু পরীমণি ইস্যু নয়, যেকোনো ইস্যুতে তারা এরকম নেতিবাচক কথা বলে কটাক্ষ করেন। এটি কিছু মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। কারণ, তাদের আর কোনো কাজ নেই। তারা কখনো পরীমণি হতে পারবে না। এভাবে নেতিবাচক কথা বলে জীবন পার করে দেবেন। এরা সাইকো। এদের পাত্তা দেওয়া উচিত না।”
এদিকে দ্রুততম সময়ে অভিযুক্ত আসামী গ্রেপ্তারে আনন্দিত চয়নিকা। তিনি বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে দ্রুত সময়ে অভিযুক্তদের ধরেছেন সেজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এটি আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। স্বস্তি পাচ্ছি। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের আশায় আছি। নিশ্চয়ই পরীমণির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘৃণ্যতম ঘটনার সঠিক বিচার হবে।”
প্রসঙ্গত, চয়নিকা চৌধুরী অভিনীত ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন পরীমণি। এই সিনেমার মধ্য দিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ছবিটি বেশ সাফল্য পায়। সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি পরীমণিকে নিয়ে একটি ওয়েব চলচ্চিত্রে কাজের ঘোষণা দেন চয়নিকা চৌধুরী।