না.গঞ্জে সংখ্যালঘু ভোট টানতে আ.লীগের ৩ পরিকল্পনা

একাত্তর লাইভ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে হিন্দুদের ভোট নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে টানতে আওয়ামী লীগ তিন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের হিন্দু নেতারা ইতোমধ্যে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নাসিকে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩ শ ৯২ জন ভোটারের মধ্যে ৮৯ হাজার হিন্দু ভোটই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সূত্র।
পরিকল্পনার প্রথম অংশে সংসদের বাইরে থাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলেরর নেতারা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন। দ্বিতীয়ত, হিন্দু নারী ভোটারদের ভোট নৌকা প্রতীকে নিশ্চিত করতে বাড়ি বাড়ি নারী নেত্রীরা যাবেন এবং সর্বশেষ পূজা কমিটি ও বিভিন্ন মন্দির, প্রার্থনালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন চিত্র, সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে কথা বলবেন নেতাকর্মীরা।
ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নওফেল আহমেদ চৌধুরী  বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনো সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে না। বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের জন্য নয় বরং দেশের সব মানুষের সম অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। অতীতেও সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগই সবচে বেশি কাজ করেছে। গত নির্বাচনের সময়ও সংখ্যালঘুরা আমাদের এবারের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়েছিল। জেলা পূজা কমিটির নেতারাও সমর্থন দিয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভীকে। আমরা আশা করছি তারা এবারও ভোট দিয়ে নৌকাকে জয়ী করবেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রতিদিনই নেতাকর্মীদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ছুটে যাচ্ছেন। ভোটারদের কাছে দলীয় প্রার্থীর জন্য ভোট চাইছেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব মানুষই আমাদের দলে রয়েছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সাম্প্রদায়িকতাকে পছন্দ করেন না। গতবারের মতো এবারও সেলিনা হায়াৎ আইভীকে ভোট দিয়ে জেতাবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন এক নির্বাচনি সমাবেশে বলেছেন, সাম্প্রতিককালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের ভূমিকা নিয়ে যারপরনাই হতাশা হিন্দু ভোটারদের একটি বড় অংশ। তারা এবার আর আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন না। বিএনপি সব সময়ই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। এবার তাই হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা বিএনপির ধানের শীষেই ভোট দেবে।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি গোপীনাথ দাস  বলেন, আমরা কাউকে বিভক্ত করি না, সবাইকে একভাবে বিচার করি। তিনি বলেন, ‘হিন্দু ভোটাররা আগের অবস্থানে নেই। তারা এখন বিবেচনা করেই তাদের ভোট দেবে। তবে এটুকু বলতে পারি হিন্দু ভোটাররা সবাই সৎ, যোগ্য ও আদর্শ ব্যক্তিকেই তাদের নগরপিতা হিসেবে বেছে নেবে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের যে তিনটি উপজেলা নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠিত তার মধ্যে অন্তত ৫০ হাজার হিন্দু ভোট আছে নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকায়। বন্দরে প্রায় ২৫ হাজার এবং প্রায় ১৪ হাজার ভোটার রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায়। শহরে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলো হলো নতুন পালপাড়া, পুরাতন-পালপাড়া, ভুঁইয়ার বাগ, নন্দীপাড়া, উকিলপাড়া, নাগবাড়ি, টানবাজার, নিতাইগঞ্জ, সাহাপাড়া। বন্দর এলাকায় রয়েছে জেলেপাড়া, বন্দর বাজার, ঢাকেশ্বরী, পৌরসভার মোড়, সুইপার কলোনি।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমি সব সময় নারায়ণগঞ্জের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে ছিলাম। তাদের উন্নয়নে সাহায্য সহযোগিতা করেছি। আমার বাড়িও হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায়। যে কারণে তারা নির্বাচনে আমার পাশে থাকবে, আওয়ামী লীগের পাশে থাকবে।