একাত্তরলাইভডেস্ক: দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নিহত নুসরাত জাহান রাফিকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। দাদির কবরের পাশেই তাকে কবর দেওয়া হবে।
নুসরাতের চাচা নুরুল হুদা জানান, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বাদ আসর সোনাগাজী সাবের পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে দাদির কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, মরদেহ পোস্টমর্টেম শেষে দুপুরের আগেই পরিবারের কাছে নুসরাতের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
বর্তমানে নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে তার বাড়িতে স্বজনদের শোকের মাতম চলছে। তার দাদা মাওলানা মোশারফ হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার নাতনি রাফি খুব শান্ত এবং ভদ্র স্বভাবের ছিল। তাকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা আমরা সহ্য করতে পারছি না। এ সময় তার খালা ছকিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে।
এদিকে মামলার এজহারভুক্ত আসামি সোনাগাজী পৌরসভার কমিশনার মকছুদ আলমকে বুধবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম (এইচএসসি) পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান ওই ছাত্রী। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। ওই সময় বোরকা পরিহিত ৪-৫ জন ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার পর প্রথমে সোনাগাজী ও ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর ওইদিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। পাঁচদিন পর বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় মারা যান তিনি।
স্বজনদের অভিযোগ, মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে না নেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।