ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
মহান বিজয়ের মাসে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় জেলা ব্যাপী অশ্লিলতার ভয়াবহ উন্মাদনা শুরু হয়েছে। গ্রাম্য কৃষ্টি কালচার পদদলিত করে মেলার নামে শুরু হয়েছে জুয়া ও নগ্ন নৃত্য। আর এ সব করা হচ্ছে বিজয় মেলার নামে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে অনুমতি নিয়ে জুয়াড়িদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে অনুষ্ঠারে যাবতীয় স্বত্ব।
আর এতে পোয়া বারো হচ্ছে জুয়াড়িদের। আমফাশ জেলা থেকে দাগী অপরাধীদের পাশাপাশি নামি দামি জুয়াড়িরা আসছে জুয়া খেলতে। চলছে ফাঁকে ফাঁকে ইয়াবার মরণ নেশা। জেলা ও উপজেলা শহরে প্রকাশ্যে মাইকিং করে বিক্রি করা হচ্ছে জুয়া ও হাউজির টিকেট। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের রেজিষ্ট্রি অফিস, শৈলকুপার কড়াইতলা ও হাটগোপালপুর এলাকায় র্যাব অভিযান চালিয়ে জুয়ার আসর ও নগ্নতার মঞ্চ ভেঙ্গে দিলেও নতুন করে আবার শুরু হয়েছে শৈলকুপার মদনডাঙ্গা, মহেশপুরের আজমপুর ইউনিয়নের বলিভাদ্রপুর ও হরিণাকুন্ডু শহরে।
মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় এই দুটি নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সংগঠন, এনজিও এবং ক্লাবের নামে চালানো হচ্ছে জুয়ার আসর। সরেজমিন দেখা গেছে একটি ভুঁইফোড় ক্লাবের নামে মহেশপুরের বলিভাদ্রপুর গ্রামে তপন নামে এক ব্যক্তি জুয়া, ওয়ানটেন ও ফোর গুটির আসর বসিয়েছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে লাল নীল আলোয় ঝলমলিয়ে উঠছে আসর। অথচ মহেশপুর পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন একেবারেই নীরব ভুমিকা পালন করছে।
অভিযোগ উঠেছে তাদের সহায়তায় এই অসামাজিক কাজ করা হচ্ছে। গ্রামের অভিভাবকরা এই অশ্লিলতা বেন্ধর দাবী জানিয়েছেন। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার মদনডাঙ্গায় আনান্দ মেলার সভাপতি রেন্টু ও মালিক ভুট্রো নামে দুই ব্যক্তির সহায়তার চলছে ওয়ানটেন ও জুয়ার বাম্পার আসর। কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী এই স্থানটি ঝুকিপুর্ন হলেও টাকার কাছে সবার মাথা বিক্রি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন এলাকার সচেতন মানুষ। তাদের অভিযোগ সকালে ঘাটে ঘাটে যার যার প্রাপ্য পৌছে দেওয়া হচ্ছে। ফলে মেলার নামে আয়োজকরা যা ইচ্ছা তাই করছে।
হরিণাকুন্ডু উপজেলার শহরের পৌরসভার পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙ্গয়ে যাত্রা জুয়ার আসর বসানো হয়েছে। সেখানেও সুস্থ সাংস্কৃতির কোন চর্চা নেই বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। মহান মুক্তিযুদ্ধকে পুজি করে এ ধরণের বেহায়পনা কর্মকান্ডে হরিণাকুন্ডুর মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও কানে পানি যাচ্ছে না পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের।
অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছ থেকে যাত্রাসহ সুস্থ বিনোদনের অনুমতি নেওয়া হয়। কিন্তু অনুমতি নেবার পরই আয়োজকদের আসল চেহারা বেরিয়ে পড়ে। ফলে সুস্থ সাংস্কৃতির বিকাশ হয়ে পড়ে রুদ্ধ। প্রশাসনের সৎ ও কর্মশীল ব্যক্তিরা এ সব নগ্নতার বিরুদ্ধে থাকলেও প্রভাব আর হস্তক্ষেপের কারণে তারাও অসহায় হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা কালচারাল অফিসার জসিম উদ্দীন জানান, তিনি নগ্নতা ও অশ্লিলতার বিরুদ্ধে। যাত্রাপালার অনুমতি নিয়ে যারা এগুলো করেন তাদের প্রতিরোধ করার কথা বলেন তিনি। তিনি আরো জানান, এসব নিয়ন্ত্রনের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটির করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু আর্থিক কারণে নিয়ন্ত্রনের পথ রুদ্ধ হচ্ছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতে কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করার পথ উন্মুক্ত হবে।