গোপন না করে বেশি করে টেস্ট করার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক : প্রতিদিন সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১ লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বর্তমানে পিপিই’র কোনো সংকট নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পিপিইর কোন সংকট নেই। পিপিই তৈরি করতে সময় লেগেছে কারণ, এর কাঁচামাল দেশে ছিল না। রপ্তানি বন্ধ ছিল এবং প্রস্তুতকারকও তেমন ছিল না। আমরা আস্তে আস্তে সেই প্রস্তুতকারক সৃষ্টি করেছি। এখন আমরা প্রত্যেক দিন প্রায় এক লাখ পিপিই সারা বাংলাদেশে দিচ্ছি, এই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি’।

শুক্রবার করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন ‘করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে আরও বেশি সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। লকডাউন আরও কার্যকর করতে হবে। বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে হাট-বাজার, দোকানে ঘোরাফেরার কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন অবাধে চলাচল করছে। ত্রাণ বিতরণেও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এসব কারণে ঝুঁকির আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।’

তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ৪৬ শতাংশই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা। এরপর ২০ শতাংশ নারায়ণগঞ্জের। এ ছাড়া গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও মুন্সিগঞ্জেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সংক্রমণের আরও কারণ ব্যাখ্যা করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘যারা বহুতল ভবনে থাকেন, লক্ষ করা যাচ্ছে যে, একে-অপরের সাথে দেখা না হলেও সংক্রমণের হার বাড়ছে। আপনাদের ভবনের লিফটের ভেতরে ও বাইরে বিশেষ করে লিফটের বোতাম, সিঁড়ির হ্যান্ডেল; হ্যান্ডেল সুইচ জীবাণুমুক্ত করে রাখুন। এগুলো সংক্রমণের উৎস।’

তিনি বলেন, ‘সমস্যা হলো রোগীরা টেস্ট করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না এবং গোপন করে যায়। ফলে চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছে। এই আচরণ আশঙ্কাজনক। আমি আহ্বান করব, বেশি করে টেস্ট করুন,নিজে সুস্থ থাকুন এবং করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দিন।’

জাহিদ মালেক জানান, ‘করোনার চিকিৎসার জন্য ৫০০ শয্যার মুগদা হাসপাতাল, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, নগর হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, লাল কুটি হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ২ হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রায় প্রস্তুত হয়ে আছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মহাখালির কাঁচাবাজারে ১৩০০ শয্যার কার্যক্রম চলছে। উত্তরার দিয়াবাড়িতে চারটি বহুতল ভবনের ১২০০ শয্যার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

সারাদেশের হাসপাতালের চিত্র তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সকল বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যার আইসিইউসহ করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে এখন রোগীরা সেবা নিচ্ছে। জেলা শহরে ৫০ থেকে ১০০ শয্যার করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল ইতিমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি আইসিইউ সাপোর্টসহ করোনা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকগুলো বেসরকারি হাসপাতালও হাতে আছে। তারাও এগিয়ে আসছেন সেবা দেয়ার জন্যে। ইতিমধ্যে ইউনিভার্সাল হাসপাতাল ১০০ শয্যার এবং আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ ২০০ শয্যার হাসপাতালটি করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করেছে।’ (ফাইল ছবি)