অসুস্থ শরীর নিয়ে আড়াই ঘণ্টা আদালতে খালেদা জিয়া

অনলাইন ডেস্ক: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিন ছিল সোমবার। হাজিরা দিতে যথারীতি আদালতে হাজির হন তিনি।

গুলশানের বাসা থেকে সকাল সোয়া ১০টার দিকে আদালতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে হাজির হন বিএনপি প্রধান। অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা থাকতে হয়ে আদালতে। পরে বেলা ১টা ৫ মিনিটে আদালত চত্বর ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া।

রাজধানীর বকশী বাজারের আলীয়া মাদ্রাসায় অবস্থিত বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি বিচার কাজ চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আদালত প্রাঙ্গণে গাড়ি থেকে নামার সময়েই খালেদা জিয়ার হাঁটা দেখে দলের উপস্থিত নেতাকর্মীরা টের পান তিনি অসুস্থ। যখন ধীর গতি আদালত কক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন এক সময় আর হাঁটতে পারছিলেন না। তখন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস শক্ত করে খালেদা জিয়ার হাত ধরে আদালত কক্ষে যেতে সহযোগিতা করেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের  সদস্য শামসুদ্দিন দিদার একাত্তরলাইভ ডটকমকে বলেন,  ‘ম্যাডাম  আজকে প্রচণ্ড অসুস্থতা নিয়ে আদালতে হাজির হয়েছেন। উনার হাঁটুতে প্রচণ্ড ব্যথা। এ অবস্থায় আদালতে হাজির হওয়াটা অমানবিক। তবু তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই আদালতে উপস্থিত হয়েছেন।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করেন। আইনজীবীরা বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এত অসুস্থতা নিয়ে আগে আদালতে আসেননি।  এ কারণে শুনানির জন্য নতুন দিন রাখার জোর আবেদন জানানো হয়।

এ সময় খালেদা জিয়ার সময় আবেদন পুনর্বিবেচনার আবেদন মঞ্জুর করে দিন পিছিয়ে ১৫ মে শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কামরুল হোসেন মোল্লা। আদালতের কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বেগম জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।

শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীরা খালেদা জিয়ার সময় বাড়ানোর আবেদনের বিরোধিতা করে তার আত্মপক্ষ সমর্থন করার আবেদন জানান। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত শুনানির নতুন দিন ঠিক করেন।

এর আগে ২৭ এপ্রিল বেগম খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল। তিনি শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেন। সর্বশেষ বারের মতো সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ৮ মে খালেদাকে হাজিরের নির্দেশ দেন আদালত।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (পলাতক) ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান (পলাতক)।