একাত্তরলাইভডেস্ক: রাজধানীর হাতিরঝিলে অবস্থিত পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভবন ভাঙার বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে এই ভবন ভাঙতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। এখন শুধু আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। এর আগে চলতি বছরের ২ জুন (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙতে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।বিজিএমইএর করা লিভ টু আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে ব্যারিস্টার রফিক উল হক, এই মামলায় হাইকোর্টে অ্যামিক্যাস কিউরি হিসেবে নিয়োজিত অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবন ৯০ দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ২০১৩ সালের ২৩ মে লিভ টু আপিল দায়ের করেন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। রায়ে বলা হয়, ভবন ভাঙার সব ব্যয় বিজিএমইএকেই বহন করতে হবে। এ ছাড়া এই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ফৌজদারি অপরাধের বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।ওই ভবনের জায়গাসহ রাজধানীর কাওরান বাজারের বেগুনবাড়ি-হাতিরঝিল প্রকল্প মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে হবে বলে আদালত রায়ে বলেন।২০১০ সালের ২ অক্টোবর রাজধানীর হাতিরঝিলে স্থাপিত এই ভবন নিয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘নো প্ল্যান টু ডেমোলিস আন অথরাইজড বিজিএমইএ বিল্ডিং সুন’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপরের দিন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ডি এইচ এম মনির উদ্দিন প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের দৃষ্টিতে আনেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্বঃপ্রণোদিত হয়ে (সুয়োমোটো) ‘ভবনটি ভাঙার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না’ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এই রায় দেওয়া হলো। প্রসঙ্গত, জলাধার সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে রাজধানীর হাতিরঝিলে নির্মিত বিজিএমইএ ভবনের নকশার অনুমোদন নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ভবনটি ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা অক্ষত থেকে যায়। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ রাজউক সেনা সদস্যদের সহায়তায় বিজিএমইএ ভবনের সামনের টিনশেড স্থাপনা ভেঙে দেয়। ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মালিকানাধীন এই জায়গা বিজিএমইএর নিজস্ব ভবন করার জন্য বিক্রি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ২০০০ সালে জলাধার সংরক্ষণ আইন হলেও তা লঙ্ঘন করে নির্মিত হতে থাকে এ ভবন। ২০০৬ সালের অক্টোবরে চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ভবনটির উদ্বোধন করেন।
৯০ দিনের মধ্যে ভাঙতে হবে
November 8, 2016