অনলাইন ডেস্ক : বহুল আলোচিত রাজধানীর বনানীতে অস্ত্রের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রীকে রাতভর ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর নেই ঘটনাস্থল রেইনট্রি হোটেলে। তাই আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাংবাদিকদের অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চলে যান হোটেল কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হোটেলের অর্থায়নকারী হুমায়রা গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা। সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেন হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচ এম আদনান হারুন। তিনি ঝালকাঠি-১ আসনের সাংসদ বি এইচ হারুনের ছেলে।
ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষ আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে আদনান হারুন দাবি করেন, তাদের হোটেলটি ‘সফট ওপেনিং’ পর্যায়ে (পুরো কার্যক্রমে নয়) আছে। এ সময় কিছু ভুলভ্রান্তি হতে পারে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন হোটেলের ৭০০ ও ৭০১ নম্বর স্যুইট ভাড়া নিয়েছিলেন শাফাত। এদিন রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত হোটেলে অবস্থান করছিলেন হোটেলের মহাব্যবস্থাপক ফ্র্যাঙ্ক ফরগেট। এই সময় পর্যন্ত তিনি অস্বাভাবিক কোনো কিছু লক্ষ করেননি।
এর আগে হোটেল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, ওই রাতে হোটেলে অস্বাভাবিক কিছু ঘটেনি। বাদী হোটেল কর্তৃপক্ষকে কোনো অভিযোগ করেননি। পরদিন সকালে তারা হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেছেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে আদনান হারুন বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি কিছু বলবেন না। ধর্ষণের শিকার ২ ছাত্রীর ভাষ্য, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাদের রেইনট্রি হোটেলে নেওয়া হয়েছিল।
ঘটনার দিন শাফাতের জন্য তার বন্ধু হোটেলের এক পরিচালক মাহির হারুন জন্মদিনের কেক পাঠিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আদনান হারুন বলেন, হোটেলের রীতি অনুযায়ী জন্মদিনে অতিথিকে কেক উপহার দেওয়া হয়। এখানে কোনো ব্যক্তি-সম্পর্কের বিষয় নেই। জন্মদিনের অনুষ্ঠান কতক্ষণ হয়েছিল- এই প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি আদনান হারুন। ফের জানতে চাইলে বলেন, এ নিয়ে তিনি কিছু বলবেন না। বিষয়টি তদন্তাধীন।
আদনান হারুন বলেন, হোটেলে কোনো অপরাধ হয়েছে কি না, তা আদালতে প্রমাণিত হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি তদন্ত করছে। তবে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের অধিকাংশ প্রশ্নেরই উত্তর দেয়নি হোটেল কর্তৃপক্ষ। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কেন সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে হোটেল কর্তৃপক্ষ চুপ থাকে। প্রশ্নের একপর্যায়ে কর্মকর্তারা উঠে চলে যান। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শাফাত-নাঈম চক্রের ঘৃণ্য অপরাধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেইনট্রি হোটেল। তাদের বিশ্বাস, অপরাধীরা যে জঘন্য অপরাধ করেছেন, তার শাস্তি তাঁদের ভোগ করতেই হবে।
প্রসঙ্গত গত ২৮ মার্চ রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মর্মে ৬ মে বনানী থানায় মামলা হয়। মামলায় ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ, রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ, ইমেকার্স ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মের স্বত্বাধিকারী নাঈম আশরাফ, শাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। আসামিদের মধ্যে নাঈম পলাতক রয়েছেন।