জাকির হোসেন সুমন , ইতালী : আগামী ১৪ই জুন ২০১৭ আবারো ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার ও জিএসপি নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার, মানবাধিকার, , রানা প্লাজা ও গার্মেন্টস সংস্কার, বিগত সালের ইউরোপিয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের রেজ্যুলুশনের সর্বশেষ অবস্থান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মানবাধিকার ক্ষুন্ন, শ্রমিক অধিকার জিএসপি নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হতে যাচ্ছে।
শ্রমিক অধিকার মানবাধিকার, রানা প্লাজা, বিগত সালের রেজ্যুলুশনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নেয়া ব্যবস্থাবলী পর্যালোচনা মোশন আনা হয়েছে।
নির্ধারিত ডিবেট-বাংলাদেশ (২০১৭/২৬৩৬(আরএসপি) এবং পার্লামেন্ট ও কমিশনের রুল ১২৮ এর অধীনে পার্লামেন্টে বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার রানা প্লাজা,জিএসপি, মানবাধিকার ইত্যাদি দাবী নিয়ে পার্লামেন্টে এই প্রস্তাব এখন বহির্বিশ্বে ব্যাপক কৌতুহলের কারন ।
প্রত্যাহার হতে পারে জিএসপি সুবিধা: জিএসপি ইস্যুতে বাংলাদেশকে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সরকারকে লেখা এক চিঠিতে তারা বলেছে, শ্রমিক অধিকারে লক্ষণীয় অগ্রগতি দেখাতে হবে। জিএসপি সুবিধা ধরে রাখতে তা করতে হবে। অন্যথায় অস্থায়ীভাবে এ সুবিধা স্থগিত করা হবে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করতে হবে। গত ৩১শে মে বাংলাদেশ সরকারকে লেখা এক চিঠিতে এসব কথা বলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গত ১৮ই মে ঢাকায় এ বিষয়ে তৃতীয় পর্যালোচনা বৈঠকের দু’সপ্তাহেরও কম সময়ে এই চিঠি এসেছে। এই চিঠি একই সঙ্গে পাঠানো হয়েছে পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও শ্রম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে। এর আগে ১৬ই মার্চ তারা আরো একটি চিঠি লিখেছিল বাংলাদেশকে।
তার জবাব দেয়নি বাংলাদেশ। এজন্য এই চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। এ চিঠিটি স্বাক্ষর করেছেন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ট্রেড অব দ্য ইউরোপিয়ান কমিশনের পরিচালক সান্দ্রা গ্যালিনা, ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এমপ্লয়মেন্ট, সোশাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ইনক্লুসন অব ইউরোপিয়ান কমিশনের লেবার মবিলিটি বিষয়ক পরিচালক জারদি কুরেল, ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিসের হিউম্যান রাইটস, গ্লোবাল অ্যান্ড
মাল্টিলেটারেল ইস্যুজ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোটে ক্লুডসেন। এতে বলা হয়েছে, ২৮ জাতির ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশকে শুল্ক মুক্ত রপ্তানি সুবিধা দেয়া হয় জিএসপির অধীনে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আগের লেখা চিঠি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন আইএলও’র সুপারিশকৃত শ্রম অধিকারের বিষয়ে মিটিংয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অ্যাকশন প্লান উপস্থাপন করে নি ঢাকা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি রেজুলেশনের
অধীনে বাংলাদেশকে যে সুবিধা দেয়া হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আমরা বলবো, জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশকে মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে দৃঢ় ও টেকসই পদক্ষেপ প্রদর্শন করতে হবে। যদি তা করা না হয় তাহলে জিএসপি রেজুলেশনের অধীনে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ মিশনের সহযোগিতা নেয়া হবে। এমন নজরদারির প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হতে পারে। এ তদন্তে
অস্থায়ীভিত্তিতে বাংলাদেশকে দেয়া সুবিধা প্রত্যাহার করা হতে পারে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১৮৬৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১৭১৫ কোটি ডলার এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যত পোশাক বিদেশে রপ্তানি হয় তার শতকরা ৬০ ভাগের বেশি যায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে।