আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইকে দায়ী করেছেন হিলারি ক্লিনটন। হিলারি মনে করেন, নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) হস্তক্ষেপের কারণে নির্বাচনী প্রচার ধাক্কা খায়। ই-মেইল ইস্যু নিয়ে এফবিআইয়ের প্রধান জেমস কোমির নতুন তদন্তের ঘোষণায় থমকে দাঁড়ায় ক্যাম্পেইন। শীর্ষ নির্বাচনী তহবিলদাতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় হিলারি তার হারের বিষয়টি এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এ ফোনালাপ গণমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গেছে। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে। হিলারির প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। নিউ ইয়র্কে ট্রাম্পের বাসভবনের সামনে প্রায় ২ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা স্লোগানে বলে, ট্রাম্প ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট নয়।’ বুধবার ট্রাম্পের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হচ্ছে। স্থানীয় সময় শনিবার রাতেও বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অধিকাংশ তরুণ-তরুণী। স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভের বড় অংশ। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কিছু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের প্রবর্তিত স্বাস্থ্যবিমার আংশিক চালু রাখা। নির্বাচনী প্রচারে এ স্বাস্থ্যবিমাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করে তা বাতিলের ওয়াদা করেছিলেন ট্রাম্প। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ট্রাম্পের কাছে জানতে চায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন হিলারির ই-মেইল ইস্যু তদন্তে একজন প্রসিকিউটর নিয়োগের যে কথা বলেছিলেন, তা বাস্তবায়ন করবেন কি না। তা ছাড়া, কর্মসংস্থান, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও কর আইনের বিষয়েও তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করবেন ট্রাম্প। পরপর দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে এ দিন বিদায় নেবেন ওবামা। ট্রাম্পের বিজয়ের পর হিলারি সাদামাটা জীবনযাপন করছেন। এর আগে ২৮ অক্টোবর এফবিআইয়ের পরিচালক কোমি কংগ্রেসকে অবহিত করেন, হিলারির ব্যবহৃত এমন কিছু ই-মেইল পাওয়া গেছে, যেগুলো নতুন করে তদন্ত করা হবে। এই এক ঘোষণায় জনপ্রিয়তা ধস নামে হিলারির। নির্বাচনের মোড় ঘুরে যায়। নির্বাচনের দুই দিন আগে যখন আর কিছুই করার ছিল না, তখন জেমস কোমি আবার ঘোষণা দেন, হিলারির ই-মেইল তদন্ত করে দেখা গেছে, সেখানে অপরাধের কোনো প্রমাণ নেই। তদন্ত শেষে গত জুলাই মাসে এমন এক সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল এফবিআই। শনিবার তহবিলদাতাদের সঙ্গে ফোনালাপে হিলারি বলেন, ‘নির্বাচনে অসফলতার জন্য এ রকম আরো কারণ আছে।’ এ দিন দাতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন করেন তিনি। জেমস কোমি হিলারিকে নির্দোষ ঘোষণা করার পর ট্রাম্পের সমর্থকরা নতুন শক্তি পায়। হিলারির প্রচার টিমের দাবি, তারা জনগণকে বোঝাতে সক্ষম হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে হিলারি অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়েছেন।
হারের জন্য এফবিআই দায়ী : হিলারি
November 13, 2016