একাত্তরলাইভডেস্ক: যশোরের অভয়নগরে ডা. আকরাম হত্যা মামলায় সাবেক এমপিসহ আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমএ রব হাওলাদার চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আসামিদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য এমএম আমিনউদ্দিন, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী গোলাম হায়দার ডাবলু ও অভয়নগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মল্লিক রয়েছেন। রায়ে চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএম আমিনউদ্দিন, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী গোলাম হায়দার ডাবলু, নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ আসাদুল্লাহ আসাদ, ছাত্রদলের অভয়নগর উপজেলা সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রহমান হাবিব, অভয়নগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক নওয়াপাড়ার নির্বাহী সম্পাদক, লোকসমাজের অভয়নগর প্রতিনিধি, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মল্লিক, নওয়াপাড়া পৌর যুবদল নেতা সৈয়দ আলী মিস্ত্রি, পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জিএম বাচ্চু এবং যুবদল কর্মী ইউশা মোল্লা। এদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ইউশা মোল্লা পলাতক রয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১৩ আগস্ট রাত ১০টার দিকে বোমা হামলায় নিহত হন অভয়নগর উপজেলার তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকরাম আলী মোল্লা। এ সময় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে নিজের নির্মাণাধীন বাড়িতে ঢুকছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডে নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থী দল জনযুদ্ধের ক্যাডাররা যুক্ত বলে সে সময় পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ডা. আকরামের ভাই ডা. এম আশরাফ আলী মোল্লা বাদী হয়ে ১৪ জনের নামে অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে দুজন ক্রসফায়ারে নিহত হয়। ২০০৮ সালের ১৫ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ১৮ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল থেকে রাত সাতটা ২০ মিনিট পর্যন্ত আদালতে মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়। ওই দিন সকালে মামলার আট আসামি আদালতে হাজির হন। কিন্তু দুপুরের খাবার বিরতির সময় আসামি জিএম বাচ্চু কৌশলে আদালত থেকে পালিয়ে যান। বৃহস্পতিবারই মামলাটির রায় ঘোষণা করা হবে বলে বুধবার রাতে জানিয়ে দেন আদালত। সে অনুযায়ী আদালতে হাজির আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতে আসামি পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট এমএম মুজিবুর রহমান, আবদুল মালেক, চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার, সুজিত অধিকারী প্রমুখ। তারা জানান, চার্জশিটভুক্ত চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এরা হলেন- নওয়াপাড়া পৌর যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ, মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং শরিফুল ইসলাম শরিফ ও সজিব। আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
হত্যা মামলায় সাবেক এমপিসহ আটজনের যাবজ্জীবন
November 3, 2016