সড়কের আন্দোলনেও পরিবহণ শ্রমিকদের নৈরাজ্য

নিজস্বপ্রতিবেদন: সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। পথে পথে অ্যাম্বুলেন্স, ওষুধের গাড়ি, বিদেশ যাত্রী, পরীক্ষার্থীর যানবাহনও আটকে দেওয়া হয়েছে। ধর্মঘটে শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর পিএস সাজ্জাদুল হাসান। রোববার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে তার গাড়ি আটকে দেয় পরিবহন শ্রমিকরা ।প্রায় আধা ঘণ্টা পর নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের টিআই (প্রশাসন) মোল্লা তাসলিম হোসেন শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে গাড়িটি ছাড়িয়ে নেন।

জানা গেছে, সকাল থেকেই পরিবহন শ্রমিকরা এ মহাসড়কে কোনো প্রকার বাস, মিনিবাস, এমনকি মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যানও চলাচল করতে দেয়নি।

এমন আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পরিবহন শ্রমিকদের বাধায় আটকা পড়া অ্যাম্বুলেন্সে সাত দিনের এক কন্যা শিশু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরের দিকে উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের চান্দগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রোববার সকাল শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছে সর্বস্তরের জনগণ। বিভিন্ন জায়গায় ঘটেছে অপ্রীতিকর ঘটনা। পরিবহন শ্রমিকরা ব্যক্তিগত গাড়ি চলতেও বাধা দিচ্ছেন। যারা ব্যক্তিগত গাড়ি নামিয়েছে তাদের অনেকের মুখে পোড়া মবিল লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া মারধরের অভিযোগও পাওয়া গেছে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জে সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীদের বহন করা বাসেও হামলা চালিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এসময় তারা বাসচালক ও ছাত্রীদের গায়ে কালি লাগিয়ে দেয়। পাশাপাশি ভেঙে ফেলে বাসের গ্লাস।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দুপুর ১২টার দিকে সাইনবোর্ড এলাকা পার হওয়ার সময় হঠাৎ শ্রমিকরা বাসটি থামিয়ে চালককে মারধর করে ও তার মুখে শরীরে কালি লাগিয়ে দেয়। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে কয়েকজন ছাত্রীকেও কালি লাগিয়ে দেয় শ্রমিকরা। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও শুরু করেন। পরে বাসের কয়েকটি গ্লাস ভাঙচুর করে বাস থেকে সবাইকে নামিয়ে দেয়া হয়।

বাসের চালক মজিবর বলেন, ‘বাসটিতে ৩৮ জন ছাত্রী ছিল। তারা সবাই সরকারি মহিলা কলেজে অধ্যয়নরত। ছাত্রী বহনকারী বাসটি সাইনবোর্ড এলাকায় এলেই হামলা করে বাসের গ্লাস ভাঙচুর করে শ্রমিকরা। পরে ছাত্রীদের গায়েও কালি মাখিয়ে দেয়।’

শ্রমিকদের গণমাধ্যমের কর্মীদের উপরও চড়াও হতে দেখা যায়। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও শ্রমিকরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে থাকে। ছবি তুলতে গেলে বাঁধা দেয় গণমাধ্যমের কর্মীদের।  ভুক্তভোগী অনেকের অভিযোগ, সড়কে পরিবহণ শ্রমিকরা যেমন নৈরাজ্য সারা বছর চালায়, তেমনি তাদের আন্দোলনেও নৌরাজ্য করে প্রমাণ করলো পরিবহণ শ্রমিকরা সভ্যতা বলে কিছু জানে না ।