আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতাঃ
স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও বরিশালের আগৈলঝাড়ার ১৬ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের খবর নেয়নি কেউ। বর্তমানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থানের শেষ স্মৃতি চিহ্ন খুঁজে পাওয়াও মুশকিল হয়ে দাড়িয়েছে। পরবর্তী প্রজন্ম জানবেও না দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তারা কে কোথায় চির নিদ্রায় শুয়ে আছেন? বছর ঘুরে বছর আসে, বিজয় দিবসের দিনে একটি রজনীগন্ধার ডাটা আর সম্মননার অর্থ দিয়ে শহীদ পরিবার সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া ছাড়া বাড়তি কিছুই জোটেনা শহীদ পরিবার সদস্যদের ভাগ্যে। শহীদ পরিবারগুলো ইচ্ছা ও আগ্রহ থাকা সত্তেও আর্থিক সংকটের কারণে স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের কবর বাঁধাই বা রক্ষনাবেক্ষন কিছুই করতে পারছেনা তারা। সরকারী বা রাজনৈতিক কোন পৃষ্ঠপোষকতাও ভাগ্যে জোটেনি তাদের। অবস্থা সম্পন্ন দু’একটি পরিবার তাদের প্রিয়জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার শেষ আশ্রয়স্থলটুকু সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে আগৈলঝাড়া উপজেলায় শহীদ হয়েছেন গৈলা গ্রামের শহীদ সিপাহী আলাউদ্দিন, শিহিপাশা গ্রামের শহীদ মোস্তফা হাওলাদার, শহীদ নুরুল ইসলাম হাওলাদার, মধ্য শিহিপাশা গ্রামের শহীদ মান্নান মোল্ল¬া, সেরাল গ্রামের শহীদ সিরাজুল ইসলাম সিপাহি, ভালুকশী গ্রামের শহীদ আব্দুল মান্নান খান, বাশাইল গ্রামের শহীদ গোলাম মওলা, শহীদ সেকেন্দার আলী, শহীদ আব্দুল আজিজ শিকদার, রাজিহারের বসুন্ডা গ্রামের শহীদ আব্দুল হক হাওলাদার, পয়সা গ্রামের শহীদ শামসুল হক, ফুল্ল¬শ্রী গ্রামের মনসুর আহম্মদ, চাঁদত্রিশিরা গ্রামের শহীদ তৈয়ব আলী বখতিয়ার, বেলুহার গ্রামের শহীদ আব্দুস ছালাম, বরিয়ালী গ্রামের শহীদ মহসীন আলী ও রত্নপুর গ্রামের শহীদ ফজলুল হক হাওলাদার। সেরাল গ্রামের শহীদ সিপাহী (সেনা সদস্য) সিরাজুল ইসলাম বরিশালের তালতলা যুদ্ধে শহীদ হন। বরিশাল তার কর্মস্থলে ওই সময় কবর দেয়া হলে পরবর্তিতে স্বজনদের ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকা সত্তেও অর্থ সংকটের কারণে ৪৫ বছরেও নিজ বাড়িতে তার প্রিয়জনের কবর স্থানান্তর করতে পারেনি। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরিশাল জেলা ইউনিট কমান্ডের সহকারী কমান্ডার (প্রচার) আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত এ বিষয়ে বলেন, সরকারী নির্দেশে বীর শহীদ সেনাদের কবরগুলো চিহ্নিত করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এটা বাস্তবায়ন না হওয়া গোটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। তিনি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন খাত থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের কবরগুলো তারা সংরক্ষন করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে তাদের আন্তরিকতা থাকতে হবে।