স্ত্রীর পরকীয়া ধরতে এসে নিজেই ধরা বোরকা পরা স্বামী

অনলাইন ডেস্ক : বোরকা পরে স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক ধরতে এসে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ধরা পড়লেন এক স্বামী। ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

আটককৃত স্বামী মাহমুদুল হাসান শেরপুর সদর উপজেলার হাওড়া গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। জামালপুর আইবিএ কলেজে অফিস করণিক হিসেবে চাকরি করেন তিনি।

জানা যায়, সাত বছর প্রেমের পর প্রেমিকা জুলেখা খাতুনকে (২৫) বিয়ে করেন মাহমুদুল হাসান (২৭)। বেশ ভালোভাবেই চলছিল তাদের সংসার। হঠাৎ একটি মোবাইল ফোনের কলে ঘটে যায় বিপত্তি। এরপর থেকে স্ত্রী জুলেখাকে সন্দেহের চোখে দেখতে থাকেন হাসান।

ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল হোসেন বলেন, সোমবার আনন্দমোহন কলেজে স্ত্রীর ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের মাস্টার্স মৌখিক পরীক্ষা থাকায় একসঙ্গে ট্রেনযোগে জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ শহরে আসেন এই দম্পতি।

রেলস্টেশন থেকে রিকশাযোগে স্ত্রীকে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন সরকারি কলেজের গেটে নামিয়ে দেন হাসান। সেখান থেকে সোজা পরীক্ষা কেন্দ্রে যান স্ত্রী। কিন্তু স্ত্রী পরীক্ষা কেন্দ্রে কি করছেন, কার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছেন- এসব বিষয়ে সন্দেহ হওয়ায় শহরের একটি দোকান থেকে বোরকা কিনে ছদ্মবেশে আবার কলেজে যান স্বামী হাসান।

কিন্তু এখানেই ভুল করে বসেন হাসান। বোরকা পরে পুরুষের বাথরুম থেকে নারী বের হওয়ায় সন্দেহ হয় কলেজের কয়েকজন ছাত্রের। পরে হাসানকে আটক করে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায় ছাত্ররা। বিষয়টি জেনে পুলিশে খবর দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঘটনাস্থলে এসে আবিষ্কার করেন বোরকা পরিহিত নারী নয়, পুরুষ।

ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য নিজের মুখে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, সোমবার সকালে স্ত্রী জুলেখা খাতুনের আনন্দমোহন কলেজের ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের মাস্টার্স মৌখিক পরীক্ষা থাকায় একসঙ্গে ট্রেনে করে জামালপুর থেকে ময়মনসিংহে আসেন। পরে রিকশায় করে স্ত্রীকে কলেজ গেটে নামিয়ে দেন। আগে থেকে সন্দেহ হওয়ায় স্ত্রী পরীক্ষা কেন্দ্রে কি করছেন, কার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছেন এসব দেখার জন্য বোরকা পরে ছদ্মবেশে কলেজে আসেন হাসান। সেখানেই ধরা পড়েন তিনি।

ওসি শাহ কামাল হোসেন আরও বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে বোরকা পরে ছদ্মবেশে কলেজে প্রবেশের ঘটনাটি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন হাসান। এরপরও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কথা বলা হচ্ছে তার স্ত্রী জুলেখা খাতুনের সঙ্গেও। তারা দুইজনে আমাদের হেফাজতে রয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোনও ট্র্যাক করা হচ্ছে। তাদের অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা আসলে তাদের সঙ্গেও কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।