সিদ্ধিরগঞ্জসংবাদদাতা :: সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক স্থানে এক দিনে ৪’লাশ উদ্ধার,আটক-১। সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় এক গৃহবধুর বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত কাল বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় লন্ডন মার্কেট এলাকার রহমান আলী বাড়ির ভাড়াটিয়া চার তলার পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাট থেকে ওই গৃহবধুর লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই গৃহবধুর নাম লায়লা (৩০)। এছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জে আরো পৃথক তিন স্থান থেকে একই দিন আরো তিনটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সকাল ৯টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি যুবউন্নয়ন কেন্দ্রের সামনে থেকে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ছিন্ন বিছিন্ন অজ্ঞাত এক লাশ উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে বেলা ১২টায় নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের বার্মাষ্ট্যান্ড এলাকায় তেল ব্যবসায়ি মেহেদীর বাড়ির সামনের পুকুর থেকে অজ্ঞাত আরেক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। বিকেল ৫টায় নাসিক ৭নং ওয়ার্ডের কদমতলী নয়াপাড়া এলাকায় ১০ শ্রেণীর এক ছাত্রীর গলায় ফাঁস দেওয়া লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার সানারপাড় লন্ডন মার্কেট এলাকার রহমান মিয়ার বাড়ির চতুর্থ তলার পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাট থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় লায়লা নামে এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত লায়লা জামালপুর জেলার শরিষাবাড়ির চরবানালী এলাকার শাহীনের প্রথম স্ত্রী। ওই ফ্ল্যাটে লায়লা-শাহীন দম্পতির সাথে আরো থাকতেন লায়লার ভাই ফয়সাল ও ইভা দম্পতি। লায়লা-শাহীন দম্পতি পেশায় হোসিয়ারি ব্যবসায়ি। এবং তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী স্থানীয় লীথি গার্মেন্টেস্ কাজ করতেন। গতকাল বৃহস্পতি দুপুর ১’টায় লায়লার ভাইয়ের স্ত্রী ইভা কর্মস্থল থেকে এসে ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পায়। পরে সে ঘরে প্রবেশ করে বিছানায় লায়লার বিবস্ত্র লাশ দেখতে পায়। এসময় সে তার স্বামী ফয়সালকে ফোনে বিষয়টি জানায়। ফয়সাল লায়লার স্বামী শাহীনকে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করে। এবং সাথে পুলিশে খবর দেয়। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম(২) সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ লায়লার স্বামী শাহিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। অপরদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯’টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকা থেকে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ছিন্ন-বিছিন্ন অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে গত বুধবার গভীর রাতের কোন একসময় দূর্ঘটনাটি ঘটে এবং অজ্ঞাত ওই ব্যাক্তিটি মারা যায়। পরে একাধিক গাড়ি ওই মৃত দেহের ওপর দিয়ে যাওয়াতে লাশটি ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়। যার কারণে তাকে সনাক্ত করা যাচ্ছে না। এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১২’টায় নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের বার্মাষ্ট্যান্ড এলাকার তেল ব্যবসায়ী মেহেদীর বাড়ির সামনের পুকুড় থেকে ভাসমান অবস্থায় পঙ্গ এক ব্যাক্তির বিবস্ত্র লাশ উদ্ধা করেছে পুলিশ। এসময় পুলিশ ওই পুকুরের ঘাট থেকে একজোড়া সেন্ডেল এবং একটি হাফপ্যান্ট উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫’টায় নাসিক ৭নং ওয়ার্ডের কদমতলী নয়াপাড়া এলাকা থেকে ১০’শ্রেণীর এক ছাত্রীর গলায় ফাঁস দেওয়া লাশ উদ্ধার করেছে। এসময় লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করেছেন নারায়গঞ্জের অতিঃ পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মেহদী ইমরান সিদ্ধিকী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সাত্তার মিয়া, পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, পরিদর্শক (অপারেশন) আজিজুল হক, উপ-পরিদর্শক জসিম উদ্দিন ও আমিনুল ইসলাম(২)। গৃহবধু হত্যাকান্ডসহ ৪টি লাশ উদ্ধারের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিঃ পুলিশ সুপার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানায়, সানারপাড়ে যে গৃহবধুর বিবস্ত্র লাশটি পাওয়া গেছে ধারণা করা হচ্ছে তাকে ধর্ষণের পর শ^াসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী শাহীনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছি। বাকি বিষয়টি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে বলা যাবে। এর সাথে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন স্থানে একই দিন আরো ৩’টি লাশ পাওয়া গেছে। সবগুলোই আমরা ময়নতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। একটি সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত। সেই লাশটি আমরা ছিন্ন-ভিন্ন অবস্থায় পেয়েছি। অপরদিকে পুকুরে যে লাশটি পাওয়া গেছে তার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। নিহত ওই ব্যক্তিটির একটি পা নেই। ধারণা করা হচ্ছে রাতের কোন একসময় গোসল করতে নেমে পানিতে তলিয়ে গেছে। পরে উপরে উঠতে পারে নি। স্কুল ছাত্রীটি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার আগে সে একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছে। সেখানে আমরা একজনের নাম পেয়েছি। আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছি তার এই আত্মহত্যার পেছনে কারো কোন প্ররোচনা আছে কিনা। বাকি সব বিষয় ময়নাতদন্তের পরে জানানো যাবে।