সাত জেলায় ১১ গুচ্ছগ্রাম উদ্বোধন

অনলাইন ডেস্ক: বাড়ি করার মতো কোনো জমি বা টাকা নেই, এমন মানুষদের জন্য উত্তরবঙ্গের সাত জেলায় ১১টি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করেছে সরকার। উপকারভোগীদের হাতে এসব জমির মালিকারা স্বত্ব তুলে দেয়া হয়েছে। ঢাকায় বসেই ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে এই গ্রামগুলো উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকার উপকারভোগীরা ভিডিও কনফারেন্সিং সুবিধা ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনিও তাদের উদ্দেশে কথা বলেন।

আজ বুধবার গণভবন থেকে এই ভিডিও কনফারেন্স করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। তাদেরকেও নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, লালমনিরহাট সদর ও পাটগ্রাম, ফরিদপুর সদর, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের কাহারোল ও পার্বতীপুর, রংপুরের পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলা এবং গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় এই গুচ্ছগ্রামগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর গৃহহীন পরিবারকে একটি করে ঘরের মালিকানা দেয়া হয়। এই মালিকানা পরিবারের গৃহকর্তা ও গৃহকর্তীর মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা হয়েছে। আর পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কোনো কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ বা ছাড়াছাড়ি হলে মালিকানা থাকবে স্ত্রীর অধিকারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও দেশে দুই লক্ষ ৮০ হাজার লোক গৃহহারা আছে। কিন্তু একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে—সেটা তিনি মানবেন না। তিনি জানান, জেলা প্রশাসকদেরকে গৃহহীনদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যেমন কেউ গৃহহীন থাকবে না, তেমনি কেউ ভিক্ষাবৃত্তি করবে না। যারা ভিক্ষা করেন, তাদের জীবন জীবিকা কীভাবে চলবে, তার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তোলা। আর দারিদ্র্যমুক্ত হবে তখনই যখন দেশের প্রতিটি মানুষ ঘর পাবে, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা হবে, সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে।

গুচ্ছগ্রামে যারা ঘর পেয়েছেন, তাদেরকে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে পরিশ্রমের মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, অভাবে পড়ে আবার ঘরের টিন বিক্রি, চাল বিক্রি বা কোনো প্রভাবশালীর খপ্পরে পড়ে জমি বা বাড়ি যেন বিক্রি না হয়, সে দিকে আপনারা দেখবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো সমস্যায় পড়েন, আমরা সমাধান করবো। কিন্তু আজকে যে গুচ্ছগ্রামের মধ্য দিয়ে যে ঘর আপনাদের দেয়া হচ্ছে যারা পাচ্ছে, যারা সুবিধাভোগী, আমি আশা করবো আপনারা তার সুরক্ষিত করবেন এবং নিজের পায়ে দাঁড়াবার জন্য আপনারা আপনাদের সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবেন।

হতদরিদ্র্য মানুষদের জন্য সরকারের নেয়া নানা প্রকল্পেরও বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তোলেন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কথা। বলেন, এর মাধ্যমে দারিদ্র্যের হাত থেকে মানুষ মুক্তি পাচ্ছে, জীবন-জীবিকার সুযোগ পাচ্ছে, উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষ নিজের পায়ে একটু দাঁড়াতে পারছে। তিনি বলেন, এ রকম বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা এবং সামাজিক নিরাপত্তার যেসব কর্মসূচি জাতির জনক নিয়েছেন, আমরা যে পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছি।