শীতলক্ষায় নৌ দূর্ঘটনায় আহত ১০নিখোঁজ ১, অদূরেই ডিবি পরিচয়ে নৌ পুলিশের চাঁদাবাজি !

স্টাফ রিপোটার : নারায়ণগঞ্জে নৌ পুলিশের পেশাদারিত্বের অভাবে প্রতি বছরই অসংখ্য নৌ দূর্ঘটনার ঘটনা ঘটলেও এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে বন্ধ হচ্ছে না এমন দূর্ঘটনা। রোববার রাত সাড়ে ৯টায় শীতলক্ষ্যা নদীতে টানবাজার এলাকায় ৫০/৬০ জন যাত্রী নিয়ে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যায় একটি ট্রলার ।

এ সময় অনেকেই সাতরিয়ে নদীর দুইপাড়ে উঠে আসলেও গুরুতর আহত ১০ জনকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে ডুবুরীরা জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

দায়িত্বরত চিকিৎসক সাবিনা ইয়াসমিন ৬ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে প্রেরণ করেন।
দূর্ঘটনা সম্পর্কে সদর থানার উপ পরিদর্শক অজয় কুমার পাল জানান, আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে চিকিৎসা দেয় হচ্ছে। আর দর্জি শ্রমিক ইমন (১৮) নামের একজন এখনো নিখোঁজ থাকায় রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১টায় শীতলক্ষা নদীতে ডুবুরী দল তল্লাসী চালিয়ে যাচ্ছে।

এ সময় উপস্থিত কয়েকজন কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘটনাস্থলের অদূরে নৌ পুলিশের চাঁদাবাজির দৃশ্য দেখিয়ে বলেন, দূর্ঘটনা রোধে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পুলিশ কাজ করার কথা থাকলেও এক্ষেত্রে তারা কোথায় ? কি করছে ?” বলেও মন্তব্য করেন।
ট্রলারে মায়ের সাথে মদনগঞ্জে যাওয়ার পথে হোসিয়ারী শ্রমিক রাতুল (১৫) জানায়, ট্রলারের ছাদে ও নীচে অনেক যাত্রী নিয়ে নৌ ফাড়ি সংলগ্ন ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার কিছুদূর পরেই একটি বালুর ট্রলারে ধাক্কা লেগে ছাদ ভেঙ্গে ডুবে যায় ট্রলারটি।

রাতুল ও তার মা জোসনা বন্দর থানার মদনগঞ্জ থেকে শহরের নয়ামটিতে এসে দর্জি কাজ শেষে বাড়ী ফেরার পথে এমন দূর্ঘটনা ঘটে। রাতুল অনেকের মতো সাতরিয়ে ফিরে আসলে মা জেসনাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ডুবুরীরা।
জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, গুরুতর আহত রমজান (২৫), জোসনা (৩০), পারভীন (১৭), আজিজ (৩৫),আব্বাস উদ্দিন (৫৫) ও নাইম (১৯) কে ঢাকা পাঠানো হয়েছে । আরা কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ী পাঠানো হয়েছে।
বন্দর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা হাসানুল আলম জানান রাত একটা পর্যন্ত আমরা নদীদে তল্লাসী চালাচ্ছি । নিখোঁজ থাকার খবর থাকলে আগামী কালও আমাদের তল্লাশী অব্যাহত থাকবে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও খেয়াগাট এলাকার অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পুলিশ কোন সময়ই এমন দূঘর্টনা বন্ধ করতে কোন কাজ করতে দেখা যায় না।

এই দূর্ঘটনার সময়ও নৌ পুলিশ ফাড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেওয়াজসহ আরো কয়েকজনকে সাদা পোষাকে হাতে লাঠি নিয়ে নদীতে অসংখ্য বালুবাহি ট্রলার, তেলবাহী ও পন্যবাহী ট্রলার থেকে চাঁদাবাজি করার দৃশ্য দেখে প্রতিবেদক তাদের সঠিক পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেয়।

প্রতিবেদককে নানাভাবে হুমকি প্রদান করে । পরে মুঠোফোনে এমন আচরণের কারণ জানতে প্রতিবেদকের পরিচয় দিলে প্রতিবেদককে তার দপ্তরে চা খাওয়ার জন্য নানাভাবে অনুরোধ করতে থাকে ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই জানান, নৌ ফাঁড়ির কর্মকর্তা নেওয়াজ ও ফাড়ির অন্যান্য দারোগারা সকালে মাছ বাজার থেকে বিশাল চাঁদাবাজি করে, বেলা বাড়তে থাকলে ওয়াকওয়েতে বা নদীর পাড়ে ঘুড়তে আসা স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদেরকে আটক করে বাণিজ্য করে, বিকেলে রেস্ট নিয়ে আবার সন্ধার পর কোন যুগল নদীর পাড়ে বসে থাকলে তাদের মারধর ও গ্রেফতার বাণিজ্য নিত্য দিনের বিষয়।

এ ছাড়াও সারাদিন ও রাতে প্রতিটি বাল্কহেড, চোরাই তেলবাহী জাহাজ ও নদীপথে সকল চোরচক্রের সাথে মিলিত হয়ে চুরির কাজে নানাভাবে সহায়তা করে নৌ পুলিশের সকল সদস্যরাই ।

অনেকেই এ সময় কঠোর সমালোচনা করে আরো বলেন,” নৌ পুলিশ নিজ স্বার্থে সারাদিন ও রাতে পালাক্রমে সকল ধরণের অপকর্ম করে আসছে প্রতিদিন। রাস্ট্রের কোন কাজটি করে নৌ পুলিশ ?” এমন প্রশ্ন ছিলো অনেকের ।