সম্পাদকীয়
শিক্ষাবান্ধব এই সরকার। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে নিয়েছেন যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ। যার সুফল জাতি পাচ্ছে। উদাহরণ সৃষ্টিকারী আরেকটি পদক্ষেপ হচ্ছে, চাকরির মেয়াদ ছয় মাস হলেই ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির সুবিধাদি পাবেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
এর আগে বেসরকারি শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেছে সরকার। আগামী বৈশাখ থেকে বৈশাখী ভাতাসহ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাবেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নিয়ে তাদের জন্য এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি সুখবর।
অর্থ মন্ত্রণালয় জারি করা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ এর অনুচ্ছেদ ১১ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেসব এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ৩০ জুন ন্যূনতম ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে, তারা অন্য শর্ত পূরণসাপেক্ষে ১ জুলাই থেকে মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন। গত বুধবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখা থেকে এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা কার্যকর করার বিষয়ে গত ১৫ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী এ সুবিধা পাবেন। জানা গেছে, এই ইনক্রিমেন্টের জন্য বাড়তি ৫৩১ কোটি ৮২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা লাগবে। আর বৈশাখী ভাতার জন্য লাগবে ১৭৭ কোটি ২৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। আমরা জানি, বর্তমান সরকারের আমলে বহু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হয়েছে।
এটি মানতে হবে যে, সবার মধ্যে শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হলে এ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। সেক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া শিক্ষার প্রসার কখনো সম্ভব নয়। শিক্ষার মান বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। পাসের হার কিংবা জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি দিয়ে মান নির্ধারণ করা যাবে না। এজন্য মানসম্পন্ন শিক্ষক তৈরি করতে হবে। অন্যদিকে, মেধাবীদের এই পেশায় আগ্রহী করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে মেধাশূন্য হয়ে গড়ে উঠবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আমরা মনে করি, শিক্ষক সম্প্রদায়ের পারিবারিক ও সামাজিক জীবন যেমন স্বচ্ছন্দ থাকা দরকার, তেমনি শিক্ষক সম্প্রদায়েরও উচিত তাদের পেশায় অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে শতভাগ আন্তরিক থাকা। মনে রাখতে হবে, মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে শিক্ষকদেরই অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। বাস্তবে সেটাই আমরা।