রোজাদারদের প্রতি নরসিংদীর ডিসি ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসের সম্মান সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে

আসাদুল হক পলাশ, নরসিংদী থেকে: রোজাদারদের সম্মানে বিশেষ মর্যাদার সফল ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস। মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, সরকারী কর্মকর্তা, রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সাবাসী পেয়েছে জেলা প্রশাসন। ‘দশ কোপে গাদা, এক কোপে চেলী’ তত্বের মতই ডিসি ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস’র এক ইফতার মাহফিল জেলা প্রশাসনের অতীত ত্র“টি বিচ্যুতি সব ধুয়ে মুছে দিয়েছে। ইফতার মাহফিলের শৃংখলা, মানসম্মত ইফতার সামগ্রীর আয়োজন, ইফতার সামগ্রীর সমবন্টন, সুবিন্যস্ত প্যান্ডেল এবং স্বল্প বয়ানে ইফতার পূর্ব সভা সমাপনসহ জেলা প্রশাসক স্বয়ং ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসের স্বশরীরী নিবিড় পর্যবেক্ষণ নরসিংদী জেলা প্রশাসনকে অনেক উচ্চ আসনে অধিষ্ঠান দিয়েছে। ইফতার মাহফিলটি অনেক দিনের আলোচনার বিষয়ে পরিনত করেছে রোজাদারদের কাছে। সচেতন ও পরিতৃপ্ত রোজাদাররা মন্তব্য করে বলেছে ‘শুধু পদভার বা চেয়ার নয়, দায়িত্ব ও কর্তব্যনিষ্ঠতার মাধ্যমেই আসে সফলতা বহি:প্রকাশ ঘটে ব্যক্তিত্বের এবং অর্জিত হয় মর্যাদা’। নরসিংদী সার্কিট হাউজে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে উপস্থিত রোজাদাররা জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোজাম্মেল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনম ফয়জুল হক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মাহাবুব রহমান শাহিনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্ব-শরীরী প্রচেষ্টা, সার্বক্ষণিক প্রত্যক্ষ নজরদারীর প্রশংসা করে বলেছেন, অনেকেই পদভারে চেয়ার ছাড়তে চাননা। যারা চেয়ার ও মাঠকে নিজেদের ঠিকানা মনে করেন, তারাই সফলতা অর্জন করেন। আর এরই বাস্তবতা হচ্ছে জেলা প্রশাসন আয়োজিত গত রবিবারের ইফতার মাহফিল। সাধারণ রোজাদারদের পাশাপাশি প্রশংসা করেছে মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, স্থানীয় রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবী ও ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষও। তারা বলছে, ইত:পূর্বে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কোন ইফতার মাহফিলে স্বয়ং জেলা প্রশাসক সহ উর্ধতন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এমন স্বশরীরি তৎপরতার কথা জানা যায়নি।
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে: কর্ণেল (অব:) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু, শিবপুরের এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, মনোহরদী-বেলাব এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পলাশের এমপি কামরুল আশরাফ খান পোটন, নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ ফাতেমা নজিব, পুলিশ সুপার আমেনা বেগম, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মনজুর এলাহী, পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ, নরসিংদী পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল, মাধবদী পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক, ঘোড়াশাল পৌর মেয়র শরিফুল ইসলাম এবং এনসিসিআই’র সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস রোজাদারদের সম্মানে তৈরী করেন বিশাল প্যান্ডেল। বৃষ্টি ঠেকাবার জন্য প্যান্ডেলের ছাদ তৈরী করা হয় তারপলিন দিয়ে। প্যান্ডেলের নীচের লনও ঢেকে দেয়া হয় তারপলিনসহ বিভিন্ন গালিচা দিয়ে। এরপর সাদা গোলাকার টেবিল ঘিরে সাদা কভারযুক্ত চেয়ার বসিয়ে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সাজানো হয় ইফতার মাহফিলটি। প্যান্ডেলের পূর্ব পাশে মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়রসহ অতিথিদের জন্য লম্বা করে মঞ্চ তৈরী করা হয়। ইফতার শুরু হবার পূর্বে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহবুব রহমান শাহিনসহ জেলা ম্যাজিস্ট্রেসী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা গেইটে দাড়িয়ে অতিথি রোজাদার ও সাধারণ রোজাদারদের অভ্যর্থনা জানান। রোজাদারদের চেয়ারে বসানোর কাজ সরাসরি তদারকী করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোজাম্মেল হক। বৃষ্টির কারণে সাংবাদিকদের ইফতার মাহফিলে যেতে কিছুটা বিলম্ব ঘটে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোজাম্মেল হক নিজে সাংবাদিকদেরকে নিয়ে ভিতরে গিয়ে নিজ দায়িত্বে সাংবাদিকদেরকে বিভিন্ন চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করেন। এ সময় মঞ্চের মাইক হাতে নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনম ফয়জুল হক সাংবাদিকদেরকে বসার ব্যবস্থা করার জন্য বার বার অনুরোধ জানান। এ সময় সকল অতিথি রোজাদারদের দৃষ্টি ছিল সাংবাদিকদের দিকে। রোজাদারদের জন্য আয়োজন করা হয় রসনা তৃপ্ত করার মত ইফতার সামগ্রী। ইফতার সামগ্রী পানীয়র মধ্যে ছিল সাদা পানি, রুহআফজা, লাবাং, ম্যাগো জুস, লেবুর সরবত ইত্যাদি। মুখরোচক খাবারের মধ্যে ছিলো ছোলা ভূনা, পিঁয়াজো, বেগুনী, সব্জী বড়া এবং সাথে ছিলো প্রাণের মুড়ি। ফলের মধ্যে ছিলো খেজুর, আঙ্গুর, পিয়ারা, আম, পেপে ইত্যাদি। সব শেষে ছিল খাসি’র কাচ্চি বিরিয়ানী। ইফতারের বিশেষ আকর্ষণ ছিল কোয়েল পাখির মাংস’র রেজালা।
ইফতার পূর্ব বক্তৃতা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনম ফয়জুল হক। ইফতারের পূর্বে ও ইফতার চলাকালে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগন প্যান্ডেলের ভিতরের সারিতে সারিতে ঢুকে রোজাদারদের ইফতার গ্রহণ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষন করেন। সফল ইফতার মাহফিলের এ দিনটি হবে জেলা প্রশাসনের জন্য একটি সোনালী অতীত।