মাহাবুবুর রহমান.
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায় নি, সে হিসাবে আজ বাদে কাল ২৮ মে প্রথম রোজা হবে। তাই মুসলমানদের সব ছেয়ে পবিত্র এই সিয়াম সাধনার মাসকে ঘিরে সারা দেশের মত পর্যটন নগরী কক্সবাজারে সাধারণ মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছে পবিত্র রোজার জন্য। রোজাকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ বাজারে গিয়ে হিসাব মেলাতে বেসামায় হয়ে পড়ছে, অনেকের দাবী নিত্য পণ্যের দাম অনেক বেশি হওয়ার প্রয়োজন থাকা সত্যেও অনেকে পণ্য না কিনেই বাড়ি ফিরছেন।
এদিকে শহরের বড় বাজার, কালুর দোকান বাজার, বাহারছড়া বাজার, পিটিস্কুল বাজারে গিয়ে দেখে গেছে একই পণ্যের ভিন্ন ভিন্ন দাম। ব্যবসায়িদের দাবী মসলার মধ্যে চাল, চনা, তেল, রসুন সহ অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। এদিকে গরুর মাংস এখন ৫০০ টাকার নীচে নেই আর মাছের বাজারেও রয়েছে সংকট। অন্যদিকে প্রচন্ড গরম আর তীব্র লোডসেডিং রোজাদারদের জন্য বড় অসুবিধার কারন হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক খাজা আহাম্মদ মিয়াজী বলেন ২৬ মে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার সহ বাংলাদেশের আকাশে কোথাও প্রবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায় নি। সে হিসাবে আজ ২৭ মে চাঁদ দেখা যাবে সেটা অনেকটা নিশ্চিত, তাই ২৮ মে রবিবার প্রথম রোজা হবে। এ সময় তিনি ইসলামের সব ছেয়ে মর্যাদা এবং গুরুত্বপূর্ন মাস রমজান মাসকে সম্মান দেখানোর জন্য সবার প্রতি আহবান জানান। বিশেষ করে ব্যবসায়িরা যাতে লাভের আশায় পণ্য মজুদ করে রোজাদারদের কষ্ট না দেয় সে জন্য তিনি বিশেষ ভাবে আহবান জানান।
এদিকে প্রবিত্র রজমান সমাগত তাই সর্বস্থরের মানুষের দৌড় এখন বাজারের দিকে যে যার সাধ্যমত ইফতার এবং সেহরীর জন্য কেনাকাটা করছেন। তবে এখানে সাধআর সাধ্যের মিল ঘটাতে পারছেনা অনেকে, তাদের দাবী নিত্য পণ্যের দাম অনেক বেশি হওয়ায় চাহিদামত জিনিস কিনতে পারছে না। আলাপ কালে কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া এলাকার আবুল কালাম বলেন আমি খুদ্র ব্যবসায়ি তবুও রোজা উপলক্ষে বাজারে গিয়ে দেখছি চনা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯২ টাকা, আর খেসারী কিনেছি ৭৭ টাকায় পিয়াজের দর ভাল তবে রসুনের দাম অস্বাভাবিক কেজী বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা যা ১ মাস আগেও ছিল ১৮০ টাকা। তবে সব ছেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে বাজারে মাছ নেই মাছ বাজারে যা আছে তাও খুব দাম আর গরুর মাংস হাড় সহ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা সব মিলিয়ে বাজারের পরিস্থিতি খুবই খারাপ।
এদিকে কালুর বড় বাজারে গিয়ে দেখা গেছে চনা ভালটি বিক্রি হচ্ছে ৮২ টাকা একই চনা বাহারছড়া বাজারে ৮৭ টাকা, একই ভাবে তেল খোলা বাজারে ৮৬ টাকা সেটা বাহারছড়ায় ৯১ টাকা। আবার শহরের পিটি স্কুল এবং কালুর দোকার বাজারে গিয়ে দেখা গেছে দামের ভিন্নতা প্রতিটি পণ্যের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি। এ ব্যপারে আলাপ কালে পিটিস্কুলের জাফর সওদাগর বলেন আমরা খুচরা ব্যবসায়ি পাইকারী দোকান থেকে কিনে এনে আমরা কিছু লাভ করে বিক্রি করি তাই পাইকারী বাজারের ছেয়ে এখানে কিছু দাম বেশি তাছাড়া মাল আনতেও একটি বড় খরচ হয়।
এ সময় দক্ষিন রুমালিয়ারছড়ার জিয়া উদ্দিন বলেন চনার দাম ২মাস আগেও ছিল ৫৫ টাকা সেটা এখন ৯০ টাকা, রসুনের দাম ২ সপ্তাহর মধ্যে বেড়েছে প্রায়৪০ টাকা জানি না কাল থেকে কাচা মরিচ আর পেয়াজের কি অবস্থা হয়। তিনি বলেন সব ছেয়ে বেশি সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে চাল কিনতে গিয়ে এখন বাজারে খাওয়াও উপযুক্ত চাল ৫০ টাকার নীচে নেই। একজন শ্রমজীবি মানুষ দৈনিক খুব বেশি হলে ৬০০ টাকা আয় করে, সেখান থেকে ১৫০ টাকা যদি তার চাল কিনতেই চলে যায় বাকী টাকা দিয়ে কি মাছ কিনবে নাকি তেল কিনবে ছেয়ে মেয়েদের লেখা পড়া চিকিৎসা খরচ কোথায় ? সব মিলিয়ে চালের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে আমরা খুব কষ্টে আছি। আর বাজারে এখন মাছের তীব্র সংকট আর যা মাছ আছে তাও অনেক দাম। আর হঠাৎ করে গরুর মাংসর দাম কেন কি কারনে কারা বাড়ালো তার কোন উত্তর কারো কাছে নেই।
এখন গরুর মাংস ৫০০ এবং ৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, এতে মানুষ গরুর মাংস কিনতে পারছে না। আর মুরগী ব্রয়লার ১৬০ টাকা আর পাকিস্তানি ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সব মিলিয়ে বাজার পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।এদিকে প্রচন্ড গরম আর তীব্র লোডসেডিং এ রোজাদারদের প্রধান সমস্যা হতে পারে জানিয়ে পাহাড়তলী এলাকার হাজী নুর মোহাম্মদ বলেন রোজা আসছে এ জন্য সবাই খুশি তবে সব মানুষের মুখে শুনছি গরম আর লোডসেডিংএর কথা। সেখেত্রে সরকার যদি বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারে তাহলে মানুষের জন্য অনেক উপকার হবে। বিশেষ সেহরী-ইফতার এবং তারাবির সময় যদি বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে ভোগান্তির শেষ থাকবে না।
তবে এখেত্রে আসার বানী শুনিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা- কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন ১-২ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতী হতে পারে।এদিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিজ কাজী মোঃ আবদুর রহমান বলেন রমজানে বাজার মনিটরিং করতে আমাদের বেশ কয়েক টি টিম থাকবে এছাড়া ভোক্তাঅধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহ অনেক প্রতিস্টান মাঠে থাকবে এবং খাবারে ভেজাল বা কোন অনিয়ম হলে সাথে সাথে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।