যৌতুকের বলি শারমিন

নরসিংদী প্রতিনিধি : যৌতুক না দেয়ার কারণে পাষন্ড স্বামী মুক্তার হোসেন (৩০) কেড়ে নিয়েছে এক সন্তানের জননী শারমিন বেগম (২৩) নামে এক গৃহবধুর প্রাণ। শুক্রবার গভীর রাতে রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে।
রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক আমিরুল শিকদার জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় মুক্তার হোসেন তার স্ত্রী শারমিন বেগম ও দুই বছরের কন্যা কিউমনা বেগম ঘরের দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়ে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অতীত থেকে চলে আসা যৌতুক এনে দেয়ার বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হতে থাকে। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে পাষন্ড স্বামী মুক্তার হোসেন ঘরে থাকা দা দিয়ে কুপেয়ে স্ত্রী শারমিন বেগমকে গুরুতর আহত করে।

শারমিনের আত্ম চিৎকার ঘরে থাকা তার কন্যা ও পাশের ঘরে থাকা শ্বশুড় আব্দুর রহিম ও শ্বাশুড়ীসহ বাড়ীর সকলে জেগে উঠে এবং ডাক চিৎকার শুরু করে। এক পর্যায়ে মুক্তার হোসেন ঘরের দরজা খুলে পালাবার চেষ্টা করলে তার স্বজনরা তাকে আটক করে বেধে রাখে এবং আহত গৃহবধু শারমিনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার শারমিনকে চিকিৎসা দিতে শুরু করলে তার মৃত্যু হয়।

ঘাতক মুক্তার হোসেনের পিতা আব্দুর রহিম রায়পুরা থানা পুলিশকে খবর দিলে রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক আমিরুল শিকদার ঘটনাস্থলে এসে বেধে রাখা ঘাতক মুক্তার হোসেনকে গ্রেফতার থানায় নিয়ে যায়।
হত্যাকান্ডের ব্যাপারে নিহতের শাহানা বেগম (৪৫) জানান, আমার স্বামী বিদেশে থাকে। আমার কোন পুত্র সন্তান নেই। তিনটি মাত্র কন্যা সন্তানের মধ্যে শারমিন সকলের ছোট। শেষ বয়সে আমাদেরকে শারমিন দেখাশুনা করবে এ আশায় বাড়ীর কাছে বিয়ে দিয়েছি।

আর এটাই কাল হয়েছে। লোভি মুক্তার হোসেন আমার সম্পত্তির লোভ সামলাতে না পেরে যৌতুকের জন্য প্রতিদিনই শারমিনকে যন্ত্রনা করতো। আজ তাকে মেরেই ফেললো। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চায়।
এব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। দাফনের পর নিহতের মা শাহানা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবেন।