যে তালা ‘চোরকে’ অসুস্থ করবে!

একাত্তরলাইভডেস্ক: রাস্তা বা অফিস কিংবা কলেজে বেঁধে রাখা সাইকেল বা মোটর সাইকেল চুরি গেলে মনকে বোঝানো যায়। কিন্তু নিজের বাড়িতে তালা লাগিয়ে রাখার পরেও যদি সাইকেলের চুরি ঠেকানো না যায় তো কার ভালো লাগে?হ্যাঁ, এই সমস্যা শুধু যে আমাদের দেশেই আছে তা নয়। সাইকেল চুরির সমস্যা অনেক ‘ভদ্র’ দেশেও ব্যাপক হারে আছে। তা না হলে তালা শুধু আমাদের অঞ্চলেই উৎপাদন হতো!সে যাই হোক, সাইকেল চুরি নিয়ে ভীষণ ঝামেলায় আছে উন্নত দেশের মানুষরাও। শুধু আমেরিকাতেই প্রতিবছর ৩০ লাখ সাইকেল চুরি হয়, ভাবা যায়! সুতরাং এতো বড় ঘটনার পর নিশ্চয়ই আমেরিকানরা বসে থাকার পাত্র নন। তাই একজন আমেরিকান উদ্যোক্তা সঙ্গে একজন সুইস ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে আবিষ্কার করলেন অভিনব এক তালা যা চোরকে অসুস্থ করে ফেলবে।দেখতে আর দশটা সাধারণ তালার মতোই, ইউ আকৃতির। পার্থক্য শুধু কালো রঙের এই তালার ওপর সাদা রঙের কিছু স্ট্রাইপ আছে। দেখতে ডিজাইন মনে হলেও এটা আসলে এক ধরনের কেমিক্যাল অস্ত্র। ফলে এই তালা ভাঙার চেষ্টা করা হলে এর থেকে নির্গত হবে রাসায়নিক গ্যাস। আর এই গ্যাস চোরকে করবে অসুস্থ। এমনকি মাস্ক পরেও রেহাই মিলবে না এই গ্যাসের আক্রমন থেকে কিংবা আক্রান্ত হওয়া থেকে।অনেকে চোর ধরার বা চোরকে ‘শিক্ষা’ দেয়ার জন্যে বিস্ফোরকসহ তালা লাগানোর চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু সেটা দুই পক্ষেই হতে পারে ক্ষতিকর। কেননা চুরির জন্যে নিশ্চয়ই কাউকে মেরে ফেলার অনুমতি দেবেনা আইন। আর মেরে না ফেললেও বিস্ফোরক আসলে কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। তাই সে চিন্তা থেকে সরতে হয়েছে বিশেষজ্ঞদের।আমেরিকান উদ্যোক্তা ড্যানিয়েল ইদজস্কির এক বন্ধুর বাইক খুব ভালো তালা লাগানো সত্ত্বেও চুরি হয়ে যায়। ফলে বিষয়টি তাকে বেশ ভাবায়। এরপর তিনি এমন এক আইডিয়া বের করলেন যাতে চোরকে মেরে ফেলা নয় অন্তত অসুস্থ করা যায়। এতে সাইকেলও রক্ষা পাবে এবং ধরা যাবে চোরকেও। ফলে সুইস ইঞ্জিনিয়ার যেভস পেরেনডকে নিয়ে উদ্ভাবন করলেন উদ্ভট কিন্তু দারুন কার্যকর এক তালা। যার নাম দেয়া হয়েছে স্কানক লক। ইদজস্কির ভাষায় এটা ক্ষতিকর কিছু নয়। শুধু কিছু সময়ের জন্যে চোরের দৃষ্টিশক্তি স্বল্প করে দেবে একই সঙ্গে তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হবে। ইদজস্কির বলেন, তিনি নিজের ওপর এই রাসায়নিক প্রয়োগ করে দেখেছেন। এটা সাময়িক এক ব্যবস্থা। আর এটা তৈরি হয়েছে দৈনন্দিন আমরা যেসব খাবার থেকে ফ্যাটি এসিড গ্রহণ করে থাকি যেমন, মাখন বা পনির এ ধরনের খাবার বা উপাদান থেকে।তবে তিনি এর কার্যকারিতা হারানোর ভয়ে অথবা চোর বিকল্প উপায় বের করে ফেলবে এই ভয়ে এর ফর্মুলা প্রকাশ করছেন না। আবিষ্কারক যুগল এই ফর্মুলার নাম দিয়েছেন, ফর্মুলা ডিথ১। ফর্মুলা প্রকাশ করুন বা না করুন আমরা চাই খুব দ্রুত এই লক আমাদের দেশেও আসুক এবং এর বাণিজ্যিক প্রচলনও দ্রুত শুরু হোক। যাতে আমাদের চোর মহোদয়দের একটা শিক্ষা দেয়া যায়। তাছাড়া ইদানিং ঢাকার রাস্তায় বেশ সাইকেল দেখা যায়। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, এই তালা আমাদের এখানে আসলে কত দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।