লাইফ স্টাইল ডেস্ক:
২৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:০১ | আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:২৭ | অনলাইন সংস্করণ
শীত মানে উল, লিলেন কিংবা পশমি কাপড়ের ছড়াছড়ি। এ সময় নানা রকমারি পোশাক পরতেই বেশি ভালো লাগে। কেউবা শীতের পোশাক আরও কেনার পরিকল্পনা করছেন, আবার কেউ হয়তো তুলে রাখা পোশাকগুলো বের করেই পরছেন। তবে যেটাই ব্যবহার করুন না কেন ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে এসব পোশাকের চাই বিশেষ যত্ন। সঠিক উপায়ে যত্ন নিলে এগুলো দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
শীতকালে ঘাম কম হয় তাই কাপড় খুব একটা ধোয়ার প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া এই সময় সূর্যের তাপ কম থাকায় কাপড় সহজে শুকায়ও না। তাই শীতের পোশাক পরার পরে তা কিছুক্ষণের জন্য বাতাসে মেলে দেওয়া ভালো। আবার উল, পশম, ফ্লানেলের পোশাক খুব সহজে পোকায় ধরে। তাই অব্যবহৃত বা কম ব্যবহৃত পোশাক রোদে শুকিয়ে ন্যাপথলিনের সাহায্যে সংরক্ষণ করতে পারেন।
তবে উলের পোশাকের ক্ষেত্রে একটু বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। এই কাপড়ের পোশাকে ধুলা-ময়লা লাগে বেশি। তাই ব্যবহারের পর ভালো মতো ঝেড়ে রাখতে হয়। আবার উলের কাপড় ধোয়ার পর তা না ঝুলিয়ে সমতল স্থানে শুকাতে দিলে এর আকৃতি নষ্ট হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
রেশম, পশম, ফ্লানেল ইত্যাদি কাপড় শ্যাম্পু দিয়ে ধুলে উজ্জ্বলতা আটুট থাকে। রেশম ও পশমের কাপড়ে ঘামের দাগ লাগলে তা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই হয়। পুরানো ঘামের দাগ ও রঙিন কাপড়ের দাগ উঠাতে অ্যামোনিয়া হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এবং সোডিয়াম হাইপো সালফাইডের দ্রবণে পরপর ভিজিয়ে শুকিয়ে নিন।
এবার জেনে নিন কীভাবে যত্নে রাখবেন শীতের পোশাকগুলো-
উল
সাধারণত ডিটারজেন্ট বা লিকুইড ডিটারজেন্ট ভালো করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে ২০/৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে উলের কাপড় কেঁচে ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন, এসব কাপড় বেশি জোরে কাঁচা বা নিংড়ানো যাবে না। উলের কাপড় ওয়াশিং মেশিনেও ধোয়া যাবে। তবে উলের কাপড়ে যদি কোনো দাগ পড়লে ধোয়ার আগে ঐ দাগের উপর লেবু ঘষে নিন।
ফ্লানেল
ফ্লানেল কাপড় ডিটারজেন্ট বা লিকুইড ডিটারজেন্ট ভালো করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে ২০/৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এ কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধোয়ার আগে কিছুক্ষণ ভিনেগার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তা না হলে ফ্লানেল কাপড়ের বাড়তি রং থাকলে চলে যাবে।
পশমি
পশমি কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া যায় না। শুধু লিকুইট ডিটারজেন্টে ৫/১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই হয়। তবে পশমি কাপড়গুলোকে কখনো অন্য কাপড়ের সঙ্গে ভিজানো বা ধোয়া যাবে না তাহলে পশম গুলো অন্যান্য কাপড়ে লেগে যাবে। চাইলে ড্রাই ওয়াশও করাতে পারেন। কাপড় ধোয়ার পর টিসু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে ভাজ করে পলিথিনে করে বা হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন।
লেদার
লেদারের জ্যাকেট বারবার ওয়াশ করা যায় না। তাই মাঝে মাঝে অল্প রৌদ্রে দিয়ে ব্রাশ করে ঝেড়ে ফেলতে হয়। বছরে ১/২ বার ড্রাই ওয়াশ করানোই ভালো। অবশ্যই লেদারের জ্যাকেট হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। অনেক দিন ব্যবহার না করার ফলে জ্যাকেটের জিপার জ্যাম হতে পারে। সেক্ষেত্রে জিপারের চেইনে মোম বা নারিকেল তেল দিয়ে ঘষে নিলে সহজ হয়ে যায়।
কাশ্মিরি
কাশ্মিরি শাল বা সোয়েটার লিকুইট ডিটারজেন্ট দিয়ে ঘরেই ধোয়া যায়। তবে হালকা ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে পানি বের করতে হবে এবং ছায়া যুক্ত স্থানে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে শুকাতে হবে। ইস্ত্রি করার সময় একটি তোয়ালে বা সুতির কাপর বিছিয়ে নিয়ে তার উপর আয়রন করতে হবে। কাশ্মিরি শাল বা সোয়েটার শুকানোর পর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে বা ভাঁজ করে পলিথিন ব্যাগে করে ন্যাপথালিন দিয়ে রাখুন।
যেভাবেই যত্ন নিন না কেন, শীতের কাপড়গুলো মাঝে মধ্যে হালকা রোদে দিতে হয়। তবে আলমারিতে রাখার আগে অবশ্যই ন্যাপথালিন দিয়ে রাখুন। কাপড়ে পারফিউম দিয়ে রাখবেন না তাহলে কাপড়ে দাগ পড়ে থাকবে। শীতের কাপড়ের সঠিক যত্ন নিলে দেখবেন তা দীর্ঘদিন পর্যন্ত উজ্জ্বল ও টেকসই থাকবে।