মোসলেম প্রধানসহ দুজনের মামলার রায় বুধবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের দুজনের মামলার রায় ঘোষণা হবে বুধবার (১৯ এপ্রিল)।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের এই দিন নির্ধারণ করেন।

এই মামলার দুই আসামি হলেন মো. মোসলেম প্রধান (৬৬) ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন (৫৪)। মোসলেম প্রধান গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকলেও মোহাম্মদ হোসেন পলাতক রয়েছেন।

এর আগে গত ৭ মার্চ এই মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

আদালত মামলাটি সিএভি রাখার পর প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেছিলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে মোসলেম প্রধানের বিরুদ্ধে ও সৈয়দ হোসেনকে ছয়টি অভিযোগেই অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই মামলায় আমরা ধর্ষণ ও ধর্মান্তরকরণকে গণহত্যার সমতুল্য হিসেবে ঘোষণার জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে আর্জি জানিয়েছি। সে জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সংঘটিত বিভিন্ন বিচারের নজির তুলে ধরেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের মৃত্যুদণ্ডই হবে একমাত্র শাস্তি সেকথাও আমরা আদালতে বলেছি।’

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, ‘মোসলেম প্রধান একজন কৃষক এবং সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। এই দুজন রাজাকার ছিলেন না। তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হলে ইতিহাস বিকৃতির আশঙ্কা রয়েছে। আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। এ জন্য আমরা আদালতে তাদের খালাস চেয়েছি।’

এই দুজনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৯ মে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয় ট্রাইব্যুনালে। এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই এই বিচার শেষে মামলাটি সিএভি রাখেন আদালত।

২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ নয় মাস ২৫ দিন তাদের অপরাধের তদন্ত কাজ শেষ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হরি দেবনাথ। তদন্তে মূল একশ ৬১ পৃষ্ঠার সঙ্গে সর্বমোট চার শ’ ৩৯ পৃষ্ঠার নথিপত্র। প্রতিবেদনে ৬০জন সাক্ষীর জবানবন্দি, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র ও সূচি এবং ঘটনাস্থলের স্থিরচিত্র দাখিল করা হয় প্রসিকিউশনে।

তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে মোট ঘটনা ৬টি। এর মধ্যে হত্যার ৬২টি, অপহরণ ও আটক ১১ জনকে এবং লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ২৫০টি বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।