আসাদুল হক পলাশ, নরসিংদী : পুলিশ ব্যুরো ইনবেস্টিগেশন (পিবিআই)’র তদন্তনাধীন একটি চাঁদাবাজী মামলায় স্বাক্ষ্য দেয়ার কারণে মোশাররফ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বাড়ীঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে আসামীরা। হুমকি দিয়েছে স্বাক্ষীর জবানবন্দী প্রত্যাহার না করলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে এলাকায় বসবাস করতে দিবে না। একই মামলার অপর স্বাক্ষী সুজন সুত্রধর নামে আরেকজন স্বাক্ষ্য দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর এটা দ্বিতীয় ঘটনা।
স্থানীয় প্রশাসন উভয় ঘটনা নরসিংদী সদর মডেল থানার জিডি সূত্রে অবগত রয়েছে। তারপরও অধ্যাবদী নিখোঁজ সুজন সুত্রধরের সন্ধ্যানে পুলিশ কার্যত কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আসামীরা এতই প্রভাবশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কোন কথা বলতে পারে না।
উভয় জিডি সূত্রে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান সুজিত সুত্রধর একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সদর থানায় একটি চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করে। মামলা নং ৪৭(৬)১৬।
এই মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্তকালে সুজিত সুত্রধরের পুত্র সুজন সুত্রধর থানা পুলিশের নিকট প্রথম স্বাক্ষ্য প্রদান করে। স্বাক্ষ্য গ্রহণের কয়েকদিন পর সুজন সুত্রধর বাড়ী থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়।
এই ব্যাপারে সুজিত সুত্রধর নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। ডায়েরী নং ১৩৭২। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনবেস্টিগেশন (পিবিআই)’র নিকট হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআই’র তদন্ত চলাকালে বাদুয়ারচর কান্দাপাড়ার সাবেক ইউপি মেম্বার নুরুল ইসলাম খানের পুত্র মোশারফ হোসেন পিবিআই’র তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ইন্সপেক্টর মোফাজ্জল হোসেন’র নিকট স্বাক্ষ্য প্রদান করে।
স্বাক্ষ্য প্রদানের পর গত ২৪ এপ্রিল ৬ আসামী মোশারফ হোসেনের বাড়ীতে গিয়ে তাকে স্বাক্ষীর জবানবন্দী প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিয়ে আসে।
এব্যাপারে গত ২৫ এপ্রিল মোশারফ হোসেন নরসিংদী সদর মডেল থানায় আলতাফ হোসেন, বদরুদ্দিন সরকার, তোফাজ্জল হোসেন মোনাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি সাধারন ডায়েরী করেন। ডায়েরী নং ১৪০৮।
পরে ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় উল্লেখিত আসামীদের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন লোক মোশারফ হোসেনের বাড়ী গিয়ে হামলা চালায়। তারা মোশারফ হোসেনকে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে বাড়ী ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট করে। তারা দা দিয়ে কুপিয়ে লোহার গ্রিল ও ঘরের টিন কেটে ফেলে।
এব্যাপারে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতার প্রমান পায়। তবে এই ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি। মোশারফ ও তার পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে জান ও মালের নিরাপত্তা হারিয়ে সার্বক্ষণিক আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।