মাদ্রাসা শিক্ষককে পিটিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে মনোহরদী থানার এস আই’র বিরুদ্ধে মামলা

নরসিংদী প্রতিনিধি : বিনা মামলা বিনা ওয়ারেন্টে আসাদুজ্জামান নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে থানায় নিয়ে পিটিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে মনোহরদী থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার শিক্ষক আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে নরসিংদীর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ৯৮ ধারায় এ মামলা দায়ের করেছেন।

বিজ্ঞ আদালত, সাদা স্ট্যাম্পগুলো উদ্ধার করার জন্য মনোহরদী থানার ওসিকে নিদের্শ দিয়েছেন। জানা গেছে, মনোহরদী উপজেলার লাখপুর ফাজিল মাদ্রাসার বিএসসি শিক্ষক আসাদুজ্জামান, নারায়নগঞ্জ জেলা ফতুল্লা থানার দেলপাড়া গ্রামে আতাউর রহমানের নিকট থেকে ব্যবসার প্রয়োজনে ৩লাখ টাকা ধার করে আনে। এর মধ্যে কিছুদিন পূর্বে এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করে দেয়।বাকী ২ লাখ টাকা জমি বিক্রি করে পরিশোধ করার কথা থাকলেও জমি বিক্রি করতে না পারায় টাকা আসাদুজ্জামান ২ লাখ টাকা পরিশোধ করতে পারেনি।

গত ১ মে পাওনাদার মোঃ আতাউর রহমান অজ্ঞাতনামা কিছু লোক নিয়ে দেনাদার শিক্ষক আসাদুজ্জামানের পীরপুর গ্রামের বাড়ীতে যায়। সেখানে গিয়ে অজ্ঞাতনামা লোকজন নিজেদেরকে গোয়েন্দা সংস্থার লোক পরিচয় দিয়ে আসাদুজ্জামানকে মনোহরদী থানায় যেতে বলে। আসাদুজ্জামান সরল বিশ্বাসে তাদের সাথে গাড়িতে উঠলে অজ্ঞতানামা লোকজন তাকে গাড়িতে বসিয়ে মারধোর করে এবং পরে মনোহরদী থানায় নিয়ে যায়। সেখানে মনোহরদী থানার এসআই আবুল কালামের কক্ষে নিয়ে গেলে এসআই আবুল কালাম আসাদুজ্জামানকে জিজ্ঞাস করে আতাউর রহমান তার কাছে কত টাকা পাওনা।

আসাদুজ্জামান দুই লক্ষ টাকা পাওনা থাকার কথা স্বীকার করলে এসআই আবুল কালাম তাৎক্ষণিকভাবে ২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দেন। শিক্ষক আসাদুজ্জামান তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পরিশোধে অপারগতা জানালে এসআই কালাম ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাতারি মারপিট করে। দীর্ঘক্ষণ তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে সাতটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প তার সামনে দিয়ে স্বাক্ষর করতে বলে।

শিক্ষক আসাদুজ্জামান সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে দারোগা কালাম ও গোয়েন্দা পরিচয়ধারী লোকজন তাকে জঙ্গী হিসেবে ক্রস ফায়ার অথবা চুরি ডাকাতির মামলায় ডুকিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে প্রথমে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় এবং পরে তার মুখ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পাওনা মর্মে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি করিয়ে তা মোবাইলে রেকডিং করে এবং ছবি উঠিয়ে রেখে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনার পর শিক্ষক আসাদুজ্জামান বুধবার নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দারোগা আবুল কালাম ও পাওনাদার মোঃ আতাউর রহমানকে আসামী করে ফৌজধারী কার্যবিধি ৯৮ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে।