নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় নিখোঁজের ১০ দিন পর ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান চৌধুরী সেলিম চৌধুরীর (৫২) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ । পাওনা টাকা চাইতে এসে সেলিম চৌধুরীকে নির্মম ভাবে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে মাটিতে পুতে রেখেছিল । আর পুলিশ মাটি খুড়ে সেলিম চৌধুরীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে ফতুল্লার কাশীপুর ভোলাইলের একটি ঝুটের গোডাউন থেকে ওই লাশটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ফয়সালকে (২৯) আটক করা হয়েছে। আর তার দেওয়া তথ্য মতেই মাটি খুঁড়ে বস্তাবন্দী অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ব্যবসায়ী সেলিম চৌধুরী ফতুল্লার বক্তাবলীর কানাইনগর এলাকার মৃত শামসুল হুদার ছেলে।
নিহতের স্ত্রী রেহেনা আক্তার রেখা জানান, সেলিম মূলত গার্মেন্টের থান কাপড় ও ঝুট ব্যবসা করতেন। তাদের বাড়ি বক্তাবলীর কানাইনগর এলাকায় হলেও সে ব্যবসার সুবিধার্থে ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। গত ৩১ মার্চ সকালে বাসা হতে ব্যবসার কাজের উদ্দেশ্যে তিনি বের হয়ে যান। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী রেখা মোবাইল ফোনে তার স্বামীর অবস্থান জানতে চাইলে সেলিম চৌধুরী জানিয়েছিলেন তিনি ফতুল্লার পঞ্চবটি মোড়ে ইস্টার্ন ব্যাংকে রয়েছেন। এরপর দুপুর ২টায় খাবার খাওয়ার জন্য ফোন করলে সেলিম চৌধুরীর ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
রেহেনা আক্তার রেখা আরো জানান, সেলিম চৌধুরী ভোলাইলের মোহাম্মদ আলী নামের এক ঝুট ব্যবসায়ীর কাছে ২ লাখ টাকা পাওনা ছিলেন। ওই টাকা নিয়ে টালবাহনা করছিল মোহাম্মদ আলী। আর ৩১ মার্চ পাওনা টাকা চাইতে গেলে আলীরটেকের ডিগ্রিরচর গ্রামের সালাউদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আলীর ভোলাইলের ঝুটের গোডাউনে যায়। এর পর হতে ব্যবসায়ী সেলিম চৌধুরী নিখোঁজ হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার এস আই মামুন আল আবেদ জানান, জিডি ও অভিযোগের সূত্র ধরে মোবাইল ট্র্যাকিং করে সেলিমের নিখোঁজের সময়কার অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। পরে বুধবার দুপুরে ভোলাইলে মোহাম্মদ আলীর ঝুটের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে কর্মচারী ফয়সালকে আটক করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মাটি খুঁড়ে বক্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩১ মার্চ রাতেই সেলিমকে হত্যা করে লাশ মাটি খুঁড়ে পুতে রাখা হয় জানিয়েছে ফয়সাল । বুধবার সন্ধ্যায় ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের মুল হোতা মোহাম্মদ আলী ও ইউনুস কে গ্রেফতার করেছে ।
এলাকাবাসী জানায়, সেলিম চৌধুরী ঝুট ব্যবসা করে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছিলেন। সম্প্রতি ব্যবসায়িক মন্দায় পড়ে যাওয়ায় অনেকে তার কাছে টাকা পেত। সেও অনেকের কাছে টাকা পেত। ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণেই তাকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুতে রাখা হতে পারে বলে অনেকের ধারণা।