একাত্তরলাইভ ডেস্ক: জামিনযোগ্য মামলায় মঈনুল হোসেনকে কেনো গ্রেপ্তার করা হয়েছে জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে আইনমন্ত্রীকে তার কৈফিয়ত দিতে আহ্বান জানিয়েছেন ড. কামাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, আরো দুই দিন জাতীয় সংসদ অধিবেশন চলবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মঈনুল হোসেনকে জামিনযোগ্য মামলায় কেনো গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কেনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সংসদে দাঁড়িয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে তার কৈফিয়ত দিতে হবে। সংসদের একটা কর্তব্য আছে। তোমরা সংসদে বক্তব্য দাও। যাতে আমরা শুনতে পারি।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল বলেন, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবাক কান্ড! তিনি এখান থেকে (সুপ্রিম কোর্ট) জামিন নিয়ে গিয়েছেন। একই ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি সিলেট থেকে ঢাকায় এসে দেখি এখনও তিনি মুক্ত হননি। কী শুরু করেছে। আমরা একটি সভ্য দেশ চাই। কিন্তু পুরো দেশটাকে কী সুন্দরবন বানাতে চাচ্ছে না কী? সুন্দরবনকে অবমাননা করা হয়। এটা একটি জঙ্গি, জঙ্গল।
সরকার এসব কেনো করছে- এ প্রশ্ন রেখে গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে না কী? আমি মনে করি, মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সংবিধানে আছে, দেশ শাসনের সময় যাদের মাথা খারাপ হয়ে যায়- এদেরকে পরীক্ষা করানো হয়। আমি মনে করি, সাইক্রিয়াটিস্ট একটি বোর্ড গঠন করে এদেরকে দ্রুত পরীক্ষা করানো হোক। কী আশ্চর্য কী আশ্চর্য, কী আশ্চর্য! মঈনুল হোসেন আইনজীবী। এই সরকার খুব ভালোভাবে তাকে চেনেন। আমি তো শুনে অবাক যে, তাকে আবারও জেলে নেওয়া হয়েছে। কেনো মঈনুল জেলে? কেনো, কেনো, কেনো? উত্তর চাই, উত্তর চাই।
আইনমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এই সরকারের না কী তথাকথিত একজন আইনমন্ত্রী আছে। তোমার কাছে আমি জবাব চাই। তুমি একজন জুনিয়ার আইনজীবী। তোমার বাবা আমাদের সহকর্মী ছিলেন। উনি আইনজীবী ছিলেন। তুমি কী হয়ে গেছো? তুমি আইন সব ভুলে গেছো? কৈফিয়ত চাই। গণতন্ত্র দাবি করো। তাহলে কৈফিয়ত দিতে হবে। দায়িত্ব আছে তোমাদের। বলতে হবে। কেনো, কেনো, কেনো?
কামাল হোসেন বলেন, যা ইচ্ছে, তাই করতে পারি। এটা গণতন্ত্র না। যার জন্য করেছো, তাকে বোঝাও, এরজন্য তোমাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি, তুমি যা ইচ্ছে তাই করবে। কেনো, কেনো, কেনো মইনুলকে গতকাল অপমান করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা জানতে চাই।
আইনমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী কখনো বলে না, সবাই মামলা করো, মামলা করো। আইনমন্ত্রী তুমি যার চাকরি করছো, তাকে বোঝাও- এভাবে কথা বলা যায় না। বোঝাও। বোঝানোর মত ক্ষমতা না থাকলে তোমাকে আমরা সাহায্য করবো। তোমাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাবো।
বিশিষ্ট এই আইনজীবী বলেন, সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর এক নম্বর স্বাক্ষর আছে। আইনমন্ত্রী তুমিও গিয়ে দেখো। মনে হয়, সব ভুলে বসেছো। তোমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তুমি শপথ নিয়েছো যে সংবিধান অনুযারি দেশ শাসন করবে। তুমি যার চাকরি করছো। উনিও শপথ নিয়েছেন। তাকে বোঝাও, আমি এদেশ শাসন করবো সংবিধান অনুযারি। যেসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, এসব সংবিধানের কোথায় লেখা আছে?
সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের জনসভার বিষয়ে তিনি বলেন, সিলেটে যেসব দেখেছি, অবাক কান্ড, অবাক কান্ড। আমাদের হোটের সামনে থেকে ৮ টা ১০ টা করে ছেলেদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো। কেনো নিয়ে হলো। কী শুরু হয়েছে গেলো? এটা বাংলাদেশ? আইনমন্ত্রী আমাকে বোঝাও হচ্ছেটা কী এদেশে?
আইনমন্ত্রীকে ড. কামাল বলেন, দ্রুত তোমার বিচার হবে। আমাদেরকে মেরে ফেলতে পারো। আমরা ভয়ে ভীতু নই।
জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আইনজীবী সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানা উল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।